অধিকাংশ সাজাপ্রাপ্ত অবৈধ আয়ের নারীই রাজনীতিকের স্ত্রী
প্রকাশ | ০৮ মে ২০১৮, ১২:২০
সাজাপ্রাপ্ত অবৈধ আয়ের নারীদের মধ্যে ৫৫ শতাংশই রাজনীতিকের স্ত্রী- এমন তথ্যই জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি)। ৬ মে (রবিবার) ধানমণ্ডির কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর দায়ের করা মামলার রায় পর্যালোচনা করে এমন পরিসংখ্যান দেয় সংস্থাটি।
‘দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয় ও সম্পদের পারিবারিক দায়: নারীর ভূমিকা, ঝুঁকি ও করণীয়’ শীর্ষক সভায় কার্যপত্রে বলা হয়, স্বামীর দুর্নীতির কাজে সহায়তা বা জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন বা সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত দুদকের ২৯টি মামলায় ২৯ জন নারীকে অধস্তন আদালত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেয়। টিআইবি বলছে- ওই ২৯ জন নারীর মধ্যে ১৬ জন অর্থাৎ ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ নারীর স্বামীই রাজনীতিক। এদের মধ্যে চারজন সাবেক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, দশজন সাবেক সংসদ সদস্য, একজন সাবেক সংসদ সদস্যের পুত্র এবং একজন সেচ্ছাসেবক লীগের সচিব।
এরপরের অবস্থানে রয়েছে সরকারি চাকরিজীবীদের স্ত্রী (২১%), যার মধ্যে দুইজন সাবেক সচিব, একজন এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) সদস্য, একজন এআইজি (পুলিশ), একজন প্রধান বন সংরক্ষক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার।
১০ শতাংশ নারীর স্বামীরা ব্যবসায়ী এবং চিকিৎসক সংগঠনের নেতা, শ্রমিক নেতা ও ব্যাংক কর্মকর্তা সহ অন্যান্য পেশার রয়েছে ১৪ শতাংশ।
স্বামীর দুর্নীতিতে সহায়তা করার অপরাধে এ ২৯ জনের মধ্যে ২৬ জন নারীকে শাস্তি দেওয়া হয়, যার মধ্যে ২৫ জনকে তিন বছর এবং ১ জনকে দুই বছরের সাধারণ কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০ জনকে সাধারণ কারাদণ্ডের সঙ্গে ২০ হাজার থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডও দেয়া হয়। দুদকের এ মামলাগুলোর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ৫০ লাখ টাকা থেকে ৮০ কোটি টাকা পর্যন্ত অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়।
সভায় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আইনের হাত থেকে রেহাই পেতে স্বামীরা স্ত্রীর নামে অবৈধ, বেআইনি সম্পদ গড়েন। এতে মামলা হলে ফেঁসে যান নির্দোষ স্ত্রীও।
স্বামীর অপকর্ম এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই পেতে নারীদের পাঁচটি পরামর্শ দেন তিনি-
প্রথমত, স্বামী অর্থ কীভাবে উপার্জন করলেন তা জিজ্ঞেস করতে হবে; দ্বিতীয়ত, নিজেকে সচেতন হতে হবে; তৃতীয়ত, অনাহুত ভিকটিম হবেন না; চতুর্থত, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফরমে কিসের অ্যাকাউন্ট না জেনে স্বাক্ষর করবেন না এবং সর্বশেষ কোনো প্রকার অর্থ লেনদেন বা ব্ল্যাঙ্ক চেক বা চেকের পাতায় না জেনে স্বাক্ষর করবেন না।