বাসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণচেষ্টা: ৩ জনের রিমান্ড
প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০১৮, ২৩:০১
বেসরকারি উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তুরাগ পরিবহনের একটি বাসের চালক ও সহকারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
২৩ এপ্রিল (সোমবার) সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন বাসের চালক রোমান, কন্টাক্টর মনির ও হেলপার নয়ন।
রাজধানীর বাড্ডায় তুরাগ পরিবহনের বাসে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর সহযোগিতায় গুলশান থানা পুলিশ তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।
গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকালই ধর্ষণচেষ্টার এই ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছিল। এজন্য প্রথমে ধর্ষণচেষ্টার বাসটি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়। এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রীর সহযোগিতায় ঘটনায় জড়িত বাসের চালক রোমান, কন্টাক্টর মনির ও হেলপার নয়নকে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ওই বাসটি জব্দ করা হয়।
ওসি আরো জানান, আসামিদের গ্রেপ্তার করে গুলশান থানায় বন্দী করা হয়। দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন গুলশান থানা-পুলিশ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম গোলাম নবী মঙ্গলবার তিনজনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওসি বলেন, ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। তবে রোমান ও নয়ন বলেছে, তারা এমন ঘটনায় জড়িত নন।
এদিকে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ জানান, তাদের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার হওয়ার পরই সোমবার রাতে বাসগুলো পুলিশকে বুঝিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, গত ২১ এপ্রিল (শনিবার) দুপুরে উত্তরা ৬নং সেক্টরে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে আসার জন্য উত্তর বাড্ডা এলাকা থেকে তিনি তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। এসময় বাসে যাত্রী ছিল মাত্র ৭-৮ জন। এক পর্যায়ে পরবর্তী স্টপেজগুলোতে বাস সামনে যাবে না বলে যাত্রীদেরকে নামাতে থাকে এবং নতুন কোনো যাত্রী ওঠানো বন্ধ রাখে।
ওই ছাত্রী তখন বিপদের আশঙ্কা ও সন্দেহ থেকে বাস থেকে নামার চেষ্টা করলে বাসের হেলপার দরজা বন্ধ করে দেয় এবং কনট্রাক্টর তার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে। এক পর্যায়ে বাসের কনট্রাক্টর ও হেলপারের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে তিনি চলন্ত গাড়ি থেকে লাফিয়ে বেরিয়ে আসেন। এরপর অন্য বাসে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে কর্তৃপক্ষ ও সহপাঠীদের বিষয়টি জানান।
ঘটনাটি জানানোর পরই যৌন হয়রানির প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে তুরাগ পরিবহনের বাসগুলো উত্তরায় পৌঁছালেই সেগুলো থামিয়ে দেন। বাসের যাত্রীদের অন্য বাসে তুলে দিয়ে চালককে তাদের ক্যাম্পাসের কাছে বাস চালিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য করেন এবং তুরাগ পরিবহনের ৩৫টি বাস আটকে রেখে প্রতিবাদ করেন উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত বাসচালক ও তার সহকারীকে গ্রেপ্তারে তারা আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন।