নিষিদ্ধ হলো ধর্ষিতার ‘টু ফিঙ্গার’ পরীক্ষা
প্রকাশ | ১২ এপ্রিল ২০১৮, ২৩:১৪
ধর্ষণের শিকার নারীর মেডিকেল পরীক্ষায় ‘টু ফিঙ্গার’ (‘দুই আঙ্গুলের’ মাধ্যমে পরীক্ষা) পদ্ধতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
১২ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
একই সঙ্গে পরীক্ষার সময় ভিকটিমের আত্মীয়, নারী চিকিৎসক, নারী পুলিশ, নারী নার্স রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণ মামলার বিচারকালে আইনজীবী কখনও ভিকটিমকে অমর্যাদাকর প্রশ্ন করতে পারবেন না বলেও রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। এর আগে ২০১৬ সালে এ পদ্ধতিকে ‘সেকেলে ও অনৈতিক’ বলে হাইকোর্টে মৌখিকভাবে মতামত উপস্থাপন করেছেন পাঁচ ফরেনসিক মেডিকেল বিশেষজ্ঞ।
এর আগে ২০১৬ সালে এ পদ্ধতিকে ‘সেকেলে ও অনৈতিক’ বলে হাইকোর্টে মৌখিকভাবে মতামত উপস্থাপন করেছেন পাঁচ ফরেনসিক মেডিকেল বিশেষজ্ঞ।
উল্লেখ্য, এ পরীক্ষায় নারীদের যোনিমুখে আঙুল ঢুকিয়ে দেখা হয়, তার হাইমেন (যোনিমুখের পর্দা) অটুট রয়েছে কি না। বহু দিন পর্যন্ত মনে করা হতো, এই পরীক্ষার মাধ্যমে একটি মেয়ের যৌন সহবাসের অভ্যাস রয়েছে কিনা তার প্রমাণ পাওয়া সম্ভব।
ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলার ডাক্তারি প্রমাণ হিসেবে অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হতো। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানই বলে যে, এই পরীক্ষার কোনও কার্যকারিতা নেই। কারণ শারীরিক সম্পর্ক ছাড়াও আরও নানা কারণে হাইমেন ছিন্ন হতে পারে। ফলে হাইমেন অটুট থাকার সঙ্গে সহবাস হয়েছে কি হয়নি, তার কোনও সম্পর্ক নেই। ওই পর্দা অন্য নানা কারণেই ছিন্ন হতে পারে। তা ছাড়া, কোনও বিবাহিতা মহিলা ধর্ষিতা হলে টু ফিঙ্গার পরীক্ষায় নতুন করে কী প্রমাণ হবে?
সনাতন এই পদ্ধতিতে ধর্ষণের পরীক্ষা করার কারণে অনেক ভিকটিম পরীক্ষা করতে আসেন না। আর এ কারণে অনেকে ধর্ষিত হয়েও বিচার পান না। ভারতেও এ পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে।