নিহত মায়ের আঙ্গুল চুষে কাটলো শিশুর ৩ দিন
প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০১৮, ০০:০৩
দেড় বছরের শিশু নাহিদ। মা বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে বুঝার বয়স হয়নি তার। তাই তালাবদ্ধ ঘরে নিহত মায়ের আঙ্গুল চুষেই তিন দিন কাটিয়ে দিয়েছে সে। শেষ পর্যন্ত ক্ষুধার যন্ত্রণা আর মরদেহের দুর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে অনবরত কান্না করতে থাকলে তাকে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা।
মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কোতালেরবাগ বৌবাজার এলাকায়।
প্রতিবেশীদের ধারণা, স্ত্রী রিমা আক্তারকে (২২) হত্যা করে মরদেহের পাশে শিশু সন্তান নাহিদকে রেখে পালিয়েছে ঘাতক স্বামী আল-আমিন। সে ওই এলাকার আছিল্লা সর্দারের ছেলে।
প্রতিবেশী গৃহবধূ নাছিমা আক্তার বলেন, বুধবার বিকালে বাসায় ফিরে আল-আমিনের ঘরে তার দেড় বছরের শিশুপুত্র নাহিদের কান্নার শব্দ শুনি। বেশ কিছুক্ষণ কান্নার শব্দ শুনে টিনের একচালা ঘরের কাছে গিয়ে দেখি বাইর থেকে ঘরের দরজায় তালা দেয়া। এরপর টিনের ফুটো দিয়ে তাকিয়ে দেখি আল-আমিনের স্ত্রী রিমা খাটের উপর দু’হাত ছড়িয়ে নিথর হয়ে পড়ে আছে আর শিশুটি বুকের কাছে বসে রিমার হাতের আঙ্গুল চুষছে। ওইসময় ঘর থেকে মারাত্মক পঁচা দুর্গন্ধ পেয়ে আশপাশের লোকজনদের ডেকে নিয়ে আসি। এরপর ঘরের তালা ভেঙে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেই।
খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই বাড়ি থেকে রিমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
এলাকাবাসী জানান, আল-আমিন ও তার বড় ভাই বাবু এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সম্প্রতি বাবুকে মাদকসহ পুলিশ গ্রেফতার করে। আল-আমিন এর আগে এক গার্মেন্টকর্মীকে বিয়ে করে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এতে ওই মেয়ে কয়েক মাস সংসার করে পালিয়ে যায়। এরপরে প্রায় আড়াই বছর আগে গার্মেন্টকর্মী রিমাকে বিয়ে করে আলআমিন। বিয়ের পর থেকে রিমাকেও কারণে-অকারণে মারধর করত সে। কয়েক মাস আগে রিমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয় আল-আমিন।
এক সপ্তাহ আগে আল-আমিন এক আত্মীয়র বাসা থেকে রিমাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। সর্বশেষ ২৬ মার্চ (সোমবার) সকালে বাড়ির আশপাশের লোকজন রিমাকে ঘরের সামনে বসে থাকতে দেখেছেন।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজালাল জানান, নিহত রিমার স্বামী আল-আমিনসহ তাদের পরিবারের সবাই আত্মগোপন করেছে। আল-আমিনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।