নেপাল গেলেন নিহত যাত্রীদের আরও ৩ স্বজন
প্রকাশ | ১৬ মার্চ ২০১৮, ১৪:৩৪
নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার বিধ্বস্ত বিএস২১১ ফ্লাইটটির নিহত দুই যাত্রীর আরও ৩ স্বজন নেপাল গিয়েছেন। বিধ্বস্ত হওয়া প্লেনের নিহত যাত্রী পিয়াস রায়ের বাবা সোহেন্দু বিশ্বাস রায় এবং বিলকিস আরার ভাই মাসুদ ও তার স্বামীকে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে নেপাল পাঠানো হয়েছে।
১৬ মার্চ (শুক্রবার) সকালে ঐ ৩ স্বজনকে কাঠমান্ডু পাঠানো হয় বলে জানালেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের কোম্পানির জিএম (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) কামরুল ইসলাম।
এদিকে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে আহত মেহেদী হাসান, আলমুন নাহার অ্যানি ও সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণাকে দেশে আনা হচ্ছে। দেশে তাদেরকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। তাদের চিকিৎসার সব কিছুই ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
এর আগে বিধ্বস্ত ফ্লাইটটির যাত্রী শাহরিন আহমেদকে গত ১৫ মার্চ ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে ঢাকায় আনা হয় শাহরীনকে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন।
বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে প্রধান সমন্বয়কারী সামন্তলাল সেন বলেন, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মতো বড় একটি দুর্ঘটনার আরণে মেন্টালি ট্রমায় রয়েছেন শাহরীন। তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তার শরীরের ৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া ডান পায়ে আঘাত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে ৭ জনকে কাঠমান্ডু ছাড়ার অনাপত্তিপত্র দেয়া হয়েছে। অপর ৩ জন হলেন ইয়াকুব আলী ও রুয়েট শিক্ষিকা ইমরানা কবির হাসি এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. রেজওয়ানুল হক। এর মধ্যে ইয়াকুব আলী ও ইমরান কবির হাসিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়া হবে এবং ডা. মো. রেজওয়ানুল হক শাওনকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হবে।
এদিকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৩০টি মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে কাঠমান্ডু পোস্ট। এক প্রতিবেদনে দৈনিকটি ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালের ফরেনসিক ডিপার্টমেন্ট প্রধান ড. প্রমোদ শ্রেষ্ঠাকে উদ্ধৃত করে বলছে, ৩০টি মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হলেও পরিচয় শনাক্ত করা গেছে মাত্র আটজনের। বাকি মরদেহ ঝলসে যাওয়ার কারণে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানান নেপালের এ চিকিৎসক।
কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যাত্রী ও পাইলটের টক্সিসিটি পরীক্ষা করা হচ্ছে এখন। যেকোনো বিমান দুর্ঘটনার পরে এই টক্সিলোজি পরীক্ষা করা হয়। এতে নিশ্চিত হওয়া যায় তারা কোনো বিষক্রিয়ায় কিংবা কেউ জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন কি না। তবে এই পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস২১১ বিধ্বস্ত হয়ে ৫১ জন নিহত হন। এর মধ্যে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ২৬।