বিএস২১১ ফ্লাইট বিধ্বস্ত
ময়নাতদন্তের আগে লাশ দেখতে পারবেন না স্বজনরা
প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০১৮, ১৯:২৭ | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৮, ১৯:৪৩
১২ মার্চ (সোমবার) নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিএস২১১ নম্বর ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন দেশি-বিদেশি ৫১ জন। নেপালের কাঠমাণ্ডুতে বর্তমানে নিহতদের লাশের অপেক্ষায় বসে আছেন অন্য সব বাংলাদেশি, নেপালি, চীনের নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নিহত ৫১ জনের কারও লাশই মর্গে আনার পর স্বজনদের দেখতে দেওয়া হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষ না হলে কোনো লাশ দেখতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান প্রমোদ শ্রেষ্ঠা।
কাঠমাণ্ডু পোস্টকে প্রমোদ চেস্টা জানান, তাদের কাছে ৫১টি মৃতদেহ আছে। সবার ময়নাতদন্ত শেষ হলে তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে লাশ শনাক্তের চেষ্টা করা হবে। এর মধ্যে ১০ জনকে দেখে শনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু বাকি ৪১ জনের শরীর বেশি পুড়ে যাওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া শনাক্ত করা সম্ভব নয়। নিহত সবার পরিবারের কাছে একটি করে ফরম দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, স্বজনদের নিহত ব্যক্তির লাশ শনাক্তকরণের জন্য সম্ভাব্য যত চিহ্ন আছে, তা উল্লেখ করতে ফরম দেয়া হয়েছে। লাশ শনাক্ত করা গেলে পরিবার বা দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর যাদের চেনা যাবে না, তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
তবে ডিএনএ পরীক্ষার ক্ষেত্রে কত দিন লাগবে সে ব্যাপারে সঠিক কিছু তিনি বলতে পারেননি।
এদিকে গতকাল ১৪ মার্চ (বুধবার) সকালে নেপালের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল রাজেন্দ্র ছত্রী বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, যত দ্রুত সম্ভব লাশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। নেপাল সেনাবাহিনী এ কাজে সহায়তা করবে।
এছাড়া গতকাল বিকেলে নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, স্বজনেরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করবেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মৃতদেহ দেওয়া হবে।
এদিকে বিমান দুর্ঘটনায় আহত ২০ জনের মধ্যে ৪ জনের অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একজনকে কৃত্রিম উপায়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের মধ্য একজন বাংলাদেশি এমরানা কবির হাসিও রয়েছেন। তার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
বাংলাদেশি আহতদের মধ্যে চিকিৎসক রেজওয়ানুল হককে গতকালই উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, আহত শাহরিন আহমেদ ঢাকায় ফিরে এসেছেন। ফলে এখন নেপালে বাংলাদেশি ৮ জন আহত রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার ড্যাস ৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ৪ ক্রুসহ বিমানের ৭১ জনের সবাই হতাহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২৬ বাংলাদেশি, ২৪ নেপালি ও ১ চীনাসহ ৫১ জন নিহত হয়েছেন। আর ১০ বাংলাদেশি, ৯ নেপালি, ১ মালদ্বীপের নাগরিকসহ ২০ জন আহত হন।