বিএস২১১ ফ্লাইট বিধ্বস্ত
শশী-শাওনের একসাথে নেপাল দেখা হলো না
প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০১৮, ১৫:৫৬ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮, ১৮:১০
স্বামী শাওনের সাথে একসঙ্গে হিমালয় কন্যা নেপালকে আর দেখা হলো না মানিকগঞ্জের মেয়ে তাহিরা তানভীন শশীর। গত ১২ মার্চ (সোমবার) ইউএস বাংলার বিএস ২১১ ফ্লাইটটিতে যাত্রী হিসেবে স্বামী রেজওয়ানুল হক শাওন (৩৩) এর সঙ্গে ছিলেন শশী।
মানিকগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকার অবসরপ্রাপ্ত ডা. রেজা হাসানের একমাত্র মেয়ে তাহিরা তানভিন শশী (২৭)। একই জেলার সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর এলাকার ডা. মোজাম্মেল হকের ছেলে ডা. রেজায়ানুল হক শাওন। প্রায় সাত বছর আগে বিয়ে হয় শশী ও শাওনের।
শাওন রংপুর মেডিকেল কলেজে কর্মরত ছিলেন। শশী চেয়েছিলেন আইন ও অপরাধ নিয়ে পড়তে। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়েছেন। ২০১৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স করার সুযোগ পান।
পারিবারিকভাবে জানা গেছে, মূলত বিবাহবার্ষিকী পালন করতেই নেপাল পাড়ি দিয়েছিলেন এই দম্পতি।
যাত্রা শুরুর আগে বিমানবন্দরে বসে পাসপোর্ট ও বিএস২১১ এর টিকেট আর নিজেদের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন শশী। এটাই শশীর তোলা শেষ ছবি। শুরুতে দুজনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লেও পরে জানা যায়, শাওন বেঁচে আছেন, তবে শশী আর নেই।
এ বিষয়ে শশীর মামা জানান, ১২ মার্চ (সোমবার) রাত ১০টার দিকে শশী নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। মঙ্গলবার ভোরের দিকে শাওনের বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। কাঠমান্ডুর ওম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শাওন। শাওনের খোঁজ নিতে তার বাবা ডা. মোজাম্মেল হক কাঠমান্ডুর হাসপাতালে পৌঁছেছেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে ইউএস বাংলার বিএস ২১১ ফ্লাইটটি ১২ মার্চ (সোমবার) দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এবং স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে বিধ্বস্ত হয়।
বিমানে ৬৭ জন যাত্রীদের মধ্যে পুরুষ ৩৭ ও নারী ২৮ জন ছিলেন, শিশু ছিলেন দুইজন। এর মধ্যে ৩২ জন বাংলাদেশি, ৩৩ জন নেপালি, একজন মালদ্বীপের এবং একজন চীনের নাগরিক। এছাড়া ফ্লাইটটিতে দুইজন পাইলট ও দুইজন বিমানকর্মী ছিল। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুলিশের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি, ইউএস বাংলার বিএস ২১১ ফ্লাইট বিধ্বস্তে নিহতের সংখ্যা ৫০। চিকিৎসাধীন যাত্রীদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।