২ দিনে রাজধানীতে খুন ৪ নারী
প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০১৮, ১৯:৩৬ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮, ১৯:৩৮
রাজধানীতে দুই দিনের ব্যবধানে চার নারী খুন হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন জনকেই নিজ বাসা ভবনে খুন করা হয়। আরেকজনের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দু’টি ঘটনার সঙ্গে নিহতের স্বামীর জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, চারটি ঘটনা তারা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পশ্চিম নাখালপাড়ায় ২৮৮ নং বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে ৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় আমেনা বেগম (৬৫) নামে এক গৃহকর্ত্রীকে। বাসাভাড়া নেওয়ার কথা বলে খুনি ওই বাড়িতে প্রবেশ করেছিল বলে নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানিয়েছে। পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন আমেনা বেগম। হত্যার পর ওই গৃহকর্ত্রীর গলার চেইন ও হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি খুলে নিয়ে যায় খুনি।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ছেলে বাবু আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি। তবে এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আমরা প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
গত ৭ মার্চ (বুধবার) রাজধানীর দারুসসালাম থানার বসুপাড়ার ডি-ব্লকের ৬৫/৬/১ নং বাড়ির পেছনের খাল থেকে অজ্ঞাত এক নারীর (২৫) বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই নারীর পরিচয় এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়।
দারুসসালাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক উল আলম বলেন, স্থানীয়রা খবর দেওয়ার পর আমরা লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। তবে এখনও তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।
ওই দিন রাজধানীর কদমতলী থানার শনিরআখড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে শিউলি (২৮) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে নিহতের স্বামী মো. রিপন জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে তাকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। মামলাটি তদন্ত করছে কদমতলী থানা পুলিশ।
কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, মঙ্গলবার রাতে কোনও এক সময় স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এতে স্বামী রিপন ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো বটি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে। এসময় বাসায় আর কেউ ছিল না। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের বাবার কাছে লাশ হস্তান্তর করেছি। ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বামী রিপন পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কদমতলীর এই হত্যাকাণ্ডের আগের দিন ৬ মার্চ রাজধানীর দারুসসালাম এলাকার টোলারবাগের ৩১২/৪ নম্বর বাসার পঞ্চম তলার ফ্ল্যাট থেকে মরিয়ম বেগম (৪০) নামে এক নারীর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মরিয়ম ঢাকা নার্সিং কলেজের হাউসকিপার ছিলেন। তার স্বামী আব্দুল হান্নান নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষক। এই দম্পতির দুই ছেলে-মেয়ে মগবাজার কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। ঘটনার সময় তার ছেলেমেয়েরা কেউ বাসায় ছিলেন না।
দারুস সালাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক উল আলম বলেন, ওইদিন সন্ধ্যায় দারুসসালাম থানার পুলিশ মরিয়মের লাশ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় নিহতের ভাই রেজাউল করিম বাদী হয়ে দারুস সালাম থানায় মামলা করেন। আমরা নিহতের স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিন দিনের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসলে ঘটনা জানা যাবে।