আন্তর্জাতিক নারী দিবস
‘জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নারীরা হোক আত্মনির্ভরশীল’
প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০১৮, ১৪:১৯
শিক্ষা ও জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে নারীদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী। এই নারীদের পেছনে রেখে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্ভব না। জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নারীরা যত বেশি আত্মনির্ভরশীল হবে দেশের উন্নয়ন তত ত্বরান্বিত হবে। নারীদের সুযোগ দিলে তারা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে তা আজ প্রমাণিত। সচিব থেকে শুরু করে যেখানে মেয়েদের দায়িত্ব দেয়া যায় সেখানেই তারা দায়িত্ব পালন করতে পারে।
তিনি তার মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কথা স্মরণ করে বলেন, বাবা যখন মন্ত্রী ছিলেন মা তখন যেমন ছিলেন, বাবা জেলে থাকাবস্থায়ও তিনি একইরকম ছিলেন। তার কোনো চাহিদা ছিল না। পাকিস্তানে অ্যাসেম্বলিতে অংশ নিতে জাতির পিতা সেখানে যেতেন, কিন্তু মা কখনো সেখানে যাওয়ার আবদার করেননি। কারণ তিনি জানতেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, জাতির পিতা যে এ দেশের স্বাধীনতার জন্যই সংগ্রাম করছেন। এমনকি বাবা যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তখনও একইরকম সরল জীবন যাপন করেছেন মা। তিনি থাকতেন ওই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতেই।
নারী জাতির গর্ব, যিনি প্রথম সকল বাধা ভেদ করে পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন সেই বেগম রোকেয়াকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী শিক্ষার গুরুত্ব বুঝে নারীদের ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলেন বেগম রোকেয়া। একটা মেয়ে যদি নিজে অর্থ উপার্জন করতে পারে, তবে কেউ তাকে অবহেলা করতে পারে না। তাই মেয়েদের বসে থাকলে চলবে না, নিজেদের কাজ করতে হবে। আত্মনির্ভরশীল হতে হবে।
নারীর উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি, সচিব পর্যায়ে কোনো নারী ছিল না, এমনকি একজন জজও নারী ছিল না। আমরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। গ্রামে নারীদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য প্রাথমিকে ৬০ভাগ নারী শিক্ষক রাখার বিধান করা হয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে জেলা উপজেলায় ৬০টি ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেল ও ন্যাশনাল হেল্পলাইন (১০৯) চালু করা হয়েছে।
এছাড়া মাতৃত্বকালীন ছুটি সবেতনে ৬ মাসে উন্নীত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা চালু করেছি। এ ছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও নির্যাতিত নারীদের ভাতা, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা চালু করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলে রাজনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, সশস্ত্রবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন। আমাদের মেয়েরা এভারেস্টে পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। নারীরা যে সুযোগ পেলে পারে, তা আজ প্রমাণিত।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পেশায় সফল পাঁচ নারীকে অনুষ্ঠানে ‘জয়িতা’ সম্মাননা দেওয়া হয়।