‘জীবনে এ রকম ভালোবাসা আর পাইনি’
প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:৪৯ | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:০৯
সশস্ত্র হামলায় আহত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী সুস্থ হয়েছেন। ২৩ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতাল থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। যাওয়ার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে আইভী বলেন, ‘আমি ভালো আছি, একদম সুস্থ, ভালো আল্লাহর রহমতে।’
চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রতিদিন খোঁজখবর নেওয়ার জন্য সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এবং ঘটনার দিন সশস্ত্র আক্রমণ থেকে তাঁকে রক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। সশস্ত্র আক্রমণ থেকে নিরস্ত্র জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাকে রক্ষা করেছে। জীবনে এ রকম ভালোবাসা আর পাইনি। আমার সবকিছু নারায়ণগঞ্জের জনগণ। তারাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই। দেশ সেবা করতে আমি নিউজিল্যান্ড থেকে চলে আসি। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির পর ২০০৩ সালে ক্যান্ডিডেট হয়ে আমি পাস করেছিলাম। আমি শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সৈনিক। আমাকে বারবার পরীক্ষা দিতে হবে না। আমি আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত কর্মী।’
মেয়র হিসেবে নারায়ণগঞ্জের সকলের লিডার জানিয়ে আইভী বলেন, ‘আমি আমার শহরের লিডার। আই অ্যাম অ্যা ফাইটার, আই অ্যাম অ্যা লিডার। আমার ফুটপাত দিয়ে আওয়ামী লীগ হাঁটবে, বিএনপি হাঁটবে এবং আমার ফুটপাত দিয়ে জনগণ হাঁটবে। এটা সকলের অধিকার। আমি যখন ট্যাক্স নেই তখন সবার কাছ থেকে নেই। সিটি লিডার হিসেবে আমি সবার মেয়র।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি শেখ হাসিনার এক ক্ষুদ্র কর্মী। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী। আমি আলী আহম্মদ চুনকার সন্তান। এই আমার পরিচয়। সকল কিছু আমার জনগণ, নারায়ণগঞ্জের জনগণ। যেই জনগণের জন্য আমি বেঁচে আছি, এখানে দাঁড়ায়ে আছি। আমি আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছি।’
গত ১৮ জানুয়ারি বিকালে সিটি ভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মেয়র আইভী। ওই দিন বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় এনে ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাকে রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ)। তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ড. বরেণ চক্রবর্তী, আবদুজ জাহেদসহ পাঁচ সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা হয়।
দুই দিন পর্যবেক্ষণ শেষে গত ২০ জানুয়ারি রাত আটটার দিকে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় বলে জানান অধ্যাপক ড. বরেণ চক্রবর্তী। তিনি জানান, স্ট্রোকের কারণে তার মস্তিষ্কের পেছনের অংশে ক্ষত হয়েছিল।
গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ নিয়ে সংঘর্ষ হয় মেয়র আইভী ও সাংসদ শামীম ওসমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। এ ঘটনায় বিব্রত ও ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের এই চীরবৈরী দুই নেতাকে ঢাকায় তলব করার কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার আগের দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন আইভী।