ধর্ষণের পর গোপনে গর্ভপাত, কিশোরীর মৃত্যু
প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০১৮, ১৬:৩০ | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮, ২১:৫৪
শরীয়তপুরে একটি কমিউনিটি হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিদর্শকের বাসায় গর্ভপাত করাতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩ জানুয়ারি (বুধবার) দুপুরে গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের ভুলু সরদার পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় স্বাস্থ্য পরিদর্শক মাজেদা বেগম ও তার ভাই আমিরুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। মেয়েটির (১৩) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ৪ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের পর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহতের ভাই বলেন, ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিবেশি নূর ইসলাম মাদবর (৬০) বিভিন্ন সময় তাসলিমাকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করতো বলে তারা জানতে পেরেছেন। এক পর্যায়ে তার বোন গর্ভবতী হয়ে পড়লে নূর ও তার স্ত্রী আয়েশা খাতুন বেড়ানোর কথা বলে গর্ভপাত করানোর জন্য তার বোনকে স্থানীয় কুচাইপট্টি বাজারের একটি কমিউনিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সেখানে কর্তব্যরত স্বাস্থ্য পরিদর্শক মাজেদা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তার বোনের গর্ভপাত করাতে রাজি হয়। পরে মাজেদা তার গ্রামের বাড়ি ভুলু সরদার পাড়া গ্রামে নিয়ে যায় তার বোনকে। সেখানে গর্ভপাত করার সময় তার বোন মারা যায় বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, পরে নুর ইসলামের স্ত্রীর পরামর্শে মাজেদা ও তার ভাই আমিরুল তার বোনের মরদেহ কমিউনিটি হাসপাতালের পাশে গর্ত খুঁড়ে চাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করে।
এ সময় স্থানীয়রা টের পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার এবং মাদেজা ও তার ভাইকে আটক করে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এহসানুল ইসলাম বলেন, লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে বাচ্চাটি শরীরের বাইরে ছিল। বাচ্চাটির বয়স সাত থেকে আট মাস হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
কিশোরীর শরীরের কিছু অঙ্গ, রক্তের নমুনা ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ডিএনএ পরীক্ষার জন্য শিশুটির শরীরের চুল, নখ, মাথা ও বুকের হাড় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এসব প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলে জানান ঐ চিকিৎসক।
গোসাইরহাট থানার ওসি মেহেদী বলেন, তারা দুইজনকে আটক করলেও নুর ইসলাম ও তার স্ত্রী আশয়া বেগম পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় গোসাইরহাট থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।