সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ধরন পাল্টাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৬, ১২:৪৪ | আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৬, ০২:৩৩
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ছেলেমেয়েদের কাছে টেনে নিন। তাদের সঙ্গে মন খুলে গল্প করুন। ছেলেমেয়েরাও যেন মা-বাবার সঙ্গে মন খুলে গল্প করতে পারে, পরিবারে সেই পরিবেশ তৈরি করুন।’
তিনি বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের সময় দেওয়া মা-বাবার কর্তব্য বলে মনে করি। সন্তানকে সময় দিতে হবে। তাদের খোঁজখবর নিতে হবে। তারা কার সঙ্গে মেশে, কোথায় যায়, সেটা জানতে হবে। সন্তানেরা যেন ধর্মীয় শিক্ষা সঠিকভাবে পায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা, সব ধর্মই শান্তির কথা বলে।’
আজ মঙ্গলবার গণভবনে ভিভিআইপি নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনী এসএসএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বিধানে প্রতিটি বাহিনীকে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। বাংলাদেশ কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকবে না। প্রতিটি বাহিনীকে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘নিজের জীবনকে দেশের জন্য ত্যাগ করার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। কিন্তু যারা নিরাপত্তায় আছেন তাদের যেন আমার জন্য কোনো ক্ষতি না হয়। আমি দেশকে ভালোবাসি। দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি। দেশের জন্য যেকোনো ত্যাগ করতে প্রস্তুত আছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েই রাজনীতি করি। আমার লক্ষ্য, দেশের মানুষের কল্যাণ করা। প্রতিটি মানুষ যেন মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে। আর সেই অনুযায়ী কাজ করছি। এবার দেশের সবচেয়ে বড় বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। যাতে সন্তুষ্ট থেকে সবাই নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘গুলশানে হামলা, শোলাকিয়ায় হামলার পেছনে যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, দেশের উন্নতি চায় না, তাদের একটা চক্রান্ত রয়েছে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্রান্তও রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের শক্তি বড় শক্তি। ধর্মের নামে ধর্মান্ধতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। মানুষ খুন করে কীভাবে বেহেশতে যাবে। কী করে একজন আধুনিক শিক্ষিত মানুষ ধর্মান্ধ হয়? আমি আসেম সম্মেলনেও এই প্রশ্ন রেখে এসেছি যে কারা এসব কাজে অর্থ দেয়, অস্ত্র দেয়, প্রশিক্ষণ দেয়। তাদের মূলে কারা আছে, তাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। ধর্মকে অবমাননা ও অসম্মানিত করা সহ্য করা হবে না। এ ক্ষেত্রে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সমাজে সচেতনতা বাড়াতে হবে। শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের মধ্যে কীভাবে ধর্মান্ধতা ঢুকছে, সেই শিকড় খুঁজে বের করতে হবে। এর পেছনে কারা কারা অর্থ দিচ্ছে, কারা ছেলেমেয়েদের মানসিক বিপর্যয় ঘটাচ্ছে, প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, সেটা বের করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ধরন পাল্টাচ্ছে। সে কারণে বাহিনীগুলোকে এটা নির্মূলে আধুনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীরা এখন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তাই প্রতিরোধেও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পারদর্শী হতে হবে।