নারায়ণগঞ্জে গৃহবধূ খুন, কিশোরীর লাশ উদ্ধার
প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৪৮
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার আফসানা বেগম (২১) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ বাড়িতে ফেলে পালিয়ে যায়। এদিকে নিখোঁজের ৪ দিন পর ইউনাইটেড মেলামাইন কারখানার শ্রমিক কুলসুম আক্তারের (১৬) মৃতদেহ একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রুবেল নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
৩০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামে ও তারাব পৌরসভার তেতলাবো এলাকায় ঘটনা দুইটি ঘটে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইসমাইল হোসেন লাশ ২টি উদ্ধারের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
গৃহবধূ আফসানার মামা তারিকুল ইসলাম জানান, ৫ বছর আগে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামের আসাদুল্লাহ মিয়ার মেয়ে আফসানার সঙ্গে একই ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের কামাল মিয়ার ছেলে রাসেলের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে আলভী (৪) নামে একটি সন্তান রয়েছে। তবে বিয়ের পর থেকেই রাসেল মাদকাসক্ত হয়ে পরেন। তিনি যৌতুকের জন্য প্রায়ই নির্যাতন করতেন। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেক বিচার সালিস হয়। সবশেষে বৃহস্পতিবার সকালেও স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। নিজ ঘরে আফসানার লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
অপরদিকে, কয়েকমাস ধরে চাঁদপুর সদর থানাধীন বহরিয়া এলাকার আমির হোসেনের মেয়ে স্থানীয় ইউনাইটেড মেলামাইন কারখানার শ্রমিক কুলসুম আক্তার (১৬) পরিবার নিয়ে উপজেলার তেতলাবো এলাকার অলিউল্লার ভাড়াটিয়া বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। রবিবার সকালে কারখানায় যাওয়ার পথে কুলসুম নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান না পেয়ে তার মা তাসলিমা বেগম রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
৩০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে কারখানার পাশের ডোবায় তার লাশ দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। নিহতের শরীরে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহতের বাবা আমির হোসেন জানান, কুলসুমকে কাজে আসা যাওয়ার পথে প্রায়ই তেতলাবো এলাকার আব্দুল হকের ছেলে রুবেল হোসেন উত্ত্যক্ত করত।
পরিবারের অভিযোগ, কুলসুমকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশে ডোবায় ফেলে দেয় রুবেল। দুপুরে তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রুবেলকে আটক করেছে পুলিশ।
রূপগঞ্জ থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন জানান, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় আলাদা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পৃথক ঘটনায় অভিযুক্তরা সকলে অচিরেই আইনের আওতায় আসবে বলে দাবি করেন ওসি।