‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরীতা নয়’
প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:১৭ | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭, ২০:১৫
কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরুন। আমরা যাতে দ্রুত মিয়ানমাররের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফেরাতে পারি সেজন্য ভূমিকা রাখবেন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরীতা নয়- এই নীতি সবার সঙ্গে সুসর্ম্পক রাখতে হবে।
২৬ নভেম্বর (রবিবার) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত দূত সম্মেলনে তিনি এ পরামর্শ দেন। ‘মানুষ ও শান্তির জন্য কূটনীতি’ শীর্ষক ৩ দিনব্যাপী সম্মেলনে বিশ্বের ৫৮ দেশে থাকা বাংলাদেশের কূটনীতিকরা অংশ নিয়েছেন।
প্রথমবারের মতো বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও স্থায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে এ দূত সম্মেলনের আয়োজন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে। বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপালের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিবিআইএন চুক্তি করেছি। ভারত-চায়না-মিয়ানমারের মধ্যেও যোগাযোগ স্থাপনের চুক্তি হয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করতে হবে। আমরা নিজের দেশের মানুষের ভাগ্যের যেমন উন্নয়ন করতে চাই, তেমনই প্রতিবেশী দেশগুলোর মানুষেরও। সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে, তবেই উন্নয়ন তরান্বিত হবে।
কূটনৈতিকদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আপনারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। সেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে, দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। কিভাবে দেশে আরও বিনিয়োগ বাড়ানো যায় তাও দেখতে হবে।
‘রোহিঙ্গাদের ফেরানোর বিষয়ে সম্প্রতি মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের করা সমঝোতা চুক্তি একটি বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্য।’
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে বিদেশে ৫টি মিশন বন্ধ করে দেয়। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সেগুলো পুনরায় খোলাসহ মোট ২৭টি মিশন চালু করেছি।
ভারতে আরও একটি মিশন খোলা হবে। এটা চেন্নাই ও শিলিগুড়িতে হতে পারে। যেখানে চালু করলে বাংলাদেশ বাণিজ্যসহ সার্বিক দিক দিয়ে লাভবান হয় সেখানেই খোলা হবে।
প্রবাসী বাঙালিদের সমস্যা সমাধানে তৎপর হওয়ার জন্য কূটনীতিকদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশে প্রচুর বাংলাদেশি রয়েছেন। যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে প্রবাসীদের সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করুন।
‘প্রবাসীরা যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। তাদের সঙ্গে যেন মানবিক দৃষ্টি দিয়ে কাজ করবেন। তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করবেন।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ সম্মেলনে বর্তমান পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্রনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে প্যানেল আলোচনাও হবে এই কনফারেন্সে।
সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশ্যে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।
সম্মেলনের লক্ষ্য প্রসঙ্গে কর্মকর্তারা বলেন, উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বৈদেশিক নীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ এবং বিশ্বের একটি দায়িত্বশীল ও শান্তি প্রিয় রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা নিয়ে আলোচনা করাই এ সম্মেলনের লক্ষ্য।