আবারো খালেদাকে জামায়াত ছাড়ার আহ্বান

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০১৬, ২০:৪৪

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়তে ফের খালেদা জিয়াকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি-ঘনিষ্ঠ অনেকে।

গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার প্রেক্ষাপটে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানানোর পর বৃহস্পতিবার পেশাজীবীদের নিয়ে খালেদার বৈঠকে এই আহ্বান জানান উপস্থিত অনেকে।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠকে প্রবীণ আইনজীবী রফিক-উল হক এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ এই আহ্বান জানান।

দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে ব্যারিস্টার রফিক সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “উনাকে (খালেদা জিয়া) বলেছি জামায়াত ছাড়তে। এর বেশি কিছু আমি বলব না।”

কয়েকদিন আগে এক অনুষ্ঠানে একই আহ্বান জানিয়ে নিরাশ হওয়া জাফরুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “জামায়াতের বিষয়টা বৈঠকে উঠেছে। আমি বলেছি, জামায়াতকে তাদের পিতৃপুরুষেরা যে অন্যায় করেছে, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, তার জন্য তাদেরকে আবার ক্ষমা চাইতে হবে। বর্তমানে যারা আছে জামায়াতে, আমার পরামর্শ হলো-তাদের দলীয়ভাবে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তারা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ বিশ্বাস করে সেটা পুনরায় উল্লেখ করবে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কবর জিয়ারত করবে।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের মনোভাব কী বুঝলেন- প্রশ্ন করা হলে জাফরুল্লাহ বলেন, “আমার মনে হয়েছে, উনিও মনে করেন এটি (জামায়াতে ইসলামী ক্ষমা চাওয়া) যুক্তিসঙ্গত।”

গত ৩০ জুন মুক্তিযোদ্ধা দলের এক অনুষ্ঠানে একই আহ্বান জানিয়েছিলেন জাফরুল্লাহ। তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে অনেক পরামর্শ তিনি গ্রহণ করতে পারেন না।

তার একদিন বাদেই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যার পর জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে দল-মত নির্বিশেষ সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে সরকারকে আহ্বান জানান খালেদা।

খালেদা জিয়া এই বৈঠকে বলেন, “আমি উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বান জানিয়েছি, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ বিষয় বসব। এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা চাই।”

সব দলকে এক করে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে খালেদা জিয়ার উদ্যোগ নেওয়াকে স্বাগত জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, জামায়াত ক্ষমা চাওয়ার শর্ত মেনে এই আন্দোলনে যুক্ত হতে পারে।

জাফরুল্লাহ বলেন, “জঙ্গির নাম করে জনগণকে ভাঁওতাবাজি দেওয়া চলবে না। ১২ ঘণ্টা চুপ করে বসে থাকল, এত লোকের মৃত্যু.. একজনকে জীবিত ধরে নাই। এই ঘটনার অবশ্যই বিচার বিভাগীয় তদন্ত হতে হবে।”

র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের ‘লাফালাফি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “কেন উনি ভেতরে ঢুকে সন্ত্রাসীদের ধরেন নাই।”

বৈঠকে অংশ নেওয়া অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, “বৈঠকে গুলশানের ক্যাফেতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সঙ্কট মোকাবেলায় দলমত নির্বিশেষে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা উনাকে পরামর্শ দিয়েছি।”