ছাতক-দোয়ারায় অবাধে চলছে বাল্যবিয়ে

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০১৬, ১৭:৪৪

অনলাইন ডেস্ক

ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের অগোচরে অবাধে চলছে বাল্যবিয়ে।

এদিকে বাল্যবিয়েগুলোতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও পাওয়া গেছে। 

জানা যায়, কতিপয় স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং একটি সংঘবদ্ধ দুষ্টচক্র দীর্ঘদিন যাবৎ কালো টাকার বিনিময়ে জন্ম নিবন্ধনের ফরমের বয়স বাড়ানোর অবৈধ বাণিজ্য করে বেড়াচ্ছেন। কালো টাকার বিনিময়ে দশ বছর বয়সী মেয়েদের বয়স বাড়িয়ে আঠারো বছর বয়সী বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে পার পেয়ে যাচ্ছেন গ্রামের অসচেতন অভিভাবকরা কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না বাল্যবিয়ে। অভিভাবকদের অসচেতনতা আর স্থানীয় অসাধু জনপ্রতিনিধি ও সিন্ডিকেট চক্রের সহযোগিতায় দিনকে দিন বাল্যবিয়ে অহরহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

সম্প্রতি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নাকের ডগায় উপজেলার সুরমা ইউনিয়নে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। 

জানা যায়, বিগত এক সপ্তাহ আগে সুরমা ইউনিয়নের পশ্চিম টেংরাটিলা নিবাসী আব্দুল হকের ছেলে আব্দুর রহমান সোহেলের সঙ্গে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয় একই ইউনিয়নের পশ্চিম টিলাগাও নিবাসী লালু মিয়ার মেয়ে সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী নাঈমা বেগমের। এলাকার অনেকেই জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রচলিত আইনকে তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাব বয়স বাড়িয়ে উক্ত বাল্যবিয়েটি সম্পন্ন করা হয়েছে। 

অপরদিকে, এই বাল্যবিয়ের এক সপ্তাহ না পেরুতেই একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী আলীপুর গ্রামে মৃত সামছু মিয়ার কন্যা শিশু সোলতানার (১০) বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়েছে ভোলাগঞ্জের অজ্ঞাত নামা ব্যক্তির ছেলে মাসুক মিয়ার সঙ্গে। 

এবিষয়ে সোলতানার অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এই বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে। এলাকার সচেতন মহলের অভিযোগ ইউপি সদস্য আব্দুল কাদির টাকার বিনিময়ে বয়স বাড়িয়ে ভূয়া জন্মনিবন্ধনের রমরমা ব্যবসা করছেন এবং উনার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় পূর্বেও এলাকায় বেশ কয়েকটি বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

তবে এবিষয়ে ইউপি সদস্য আব্দুল কাদিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার ওপর আনিত অভিযোগ মিথ্যা, এ ধরণের ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

এছাড়া এবিষয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইতোমধ্যে অসংখ্য বাল্যবিয়ে রোধ করা হয়েছে। বাল্যবিয়ে রোধে প্রশাসন জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচির পাশাপাশি সকলের সমন্বয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। এর সঙ্গে কারও সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেলে তা যথা শিগ্রই খতিয়ে দেখা হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।