রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ৮ লাখ ছাড়িয়েছে
প্রকাশ | ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:৪৪
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ থামছে না।এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ৮ লাখ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম।
ক’দিন আগে তারা জানিয়েছিল, রাখাইনে নতুন করে শুরু হওয়া সংকটের দুই মাসে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪ হাজারে। নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, আগে থেকে কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে মিলে তাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ১৭ হাজারে।
২৫ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্টে বিদ্রোহীদের হামলার পর ক্লিয়ারেন্স অপারেশন জোরদার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তখন থেকেই মিলতে থাকে বেসামরিক নিধনযজ্ঞের আলামত। পাহাড় বেয়ে ভেসে আসতে শুরু করে বিস্ফোরণ আর গুলির শব্দ। পুড়িয়ে দেওয়া গ্রামগুলো থেকে আগুনের ধোঁয়া এসে মিশতে শুরু করে মৌসুমী বাতাসে। মায়ের কোল থেকে শিশুকে কেড়ে নিয়ে শূন্যে ছুড়ে দেয় সেনারা। কখনও কখনও কেটে ফেলা হয় তাদের গলা। জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় মানুষকে। সেই থেকে গত দুই মাসে বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৬ লাখ ৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমও। তারা বলছে, নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই গাদাগাদি করে অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরগুলোতে অবস্থান করছে। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে বসবাস করছে মাত্র ৪৬ হাজার।
আশ্রয় শিবিরগুলোতে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে আইওএম ও অংশীদাররা দুই মাসের বেশি সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছে। আইওএম ৮০ হাজার গৃহনির্মাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে। এগুলো দিয়ে প্রায় ৩ লাখ ৯৫ হাজার পরিবার তাদের আশ্রয় নির্মাণ করেছে। এতে করে শরণার্থীরা প্রবল বৃষ্টিপাত ও কঠোর রোদ থেকে নিজেদের রক্ষার পাশাপাশি ঘুমানোর জায়গা পেয়েছে।আইওএম তার অংশীদার এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও কাজ করচ্ছে।
জাতিসংঘ সম্প্রতি প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য ৪৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে। এর তিন সংস্থার এক যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নিশ্চিতে সীমান্ত খুলে দিয়েছে। পালিয়ে আসা মানুষদের জন্য নিশ্চিত করেছে নিরাপত্তা আর আশ্রয়। রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয়দের আর্তি আর উদারতা আমাদের হৃদয়ে নাড়া দিয়ে গেছে। জাতিসংঘের মতে, এ অঞ্চলে কয়েক দশকের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি সংখ্যাক ‘শরণার্থীর’ প্রবেশ। সোমবার ওই বিশ্বসংস্থাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কুয়েতের উদ্যোগে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি সম্মেলনে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা (৩৬০ মিলিয়ন ডলার) সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।