যমজ সন্তানের একজনকে পেটে রেখেই সেলাই
প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৩:১৫
অস্ত্রোপচারে যমজ সন্তানের একজনকে ভূমিষ্ঠ করিয়ে আরেকজনকে পেটে রেখেই অস্ত্রোপচারের কাজ শেষ করেছেন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার এক চিকিৎসক।
সরকারি মালিগাঁও হাসপাতালের সহকারী সার্জন হোসনে আরা তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ‘লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ খাদিজা আক্তার (১৮) নামে এক প্রসূতির অস্তোপচার করলে এ ঘটনা ঘটে।
অস্তোপচারের পাঁচ সপ্তাহ পর রবিবার রাতে খাদিজাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বাচ্চু মিয়া জানান, খাদিজাকে অধ্যাপক নিলুফা সুলতানা রোজির তত্ত্বাবধানে গাইনি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা রয়েছে।
খাদিজা কুমিল্লার হোমনা উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের আউয়াল হোসেনের স্ত্রী।
খাদিজার মা আমেনা বেগমের অভিযোগ, গত ১৮ সেপ্টেম্বর হোসনে আরা তার ব্যক্তিগত ‘লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ নিয়ে খাদিজার অস্ত্রোপচার করেন। তার গর্ভে দুটি সন্তান থাকলেও অস্ত্রোপচার করে তিনি একটি সন্তান ভূমিষ্ঠ করান; আরেকটি সন্তানকে টিউমার বলে অপারেশনের কাজ শেষ করেন।”
এরপর আমেনা এক মাস ধরে খাদিজাকে নিয়ে বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে ছুটোছুটি করেন বলে জানান।
তিনি বলেন, “পাঁচ-ছয় দিন আগে হোমনার একটি ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাম করলে চিকিৎসক জানান, তার পেটে টিউমার না, আকেটি সন্তান রয়েছে। বিষয়টি হোসনে আরাকে জানালে তিনি সমঝোতার চেষ্টা করেন। পরে তারা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি সরকারি হাসপাতালে আসা রোগীদের তার ক্লিনিকে পাঠিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বাধ্য করেন। সরকারি অফিস চলাকালেও তিনি তার ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের কাজ করে থাকেন।
এ বিষয়ে হোসনে আরা বলেন, “যা বলার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে বলেছি।”
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মো. জালাল হোসেন বলেন, ঘটনা জানার পর প্রাথমিকভাবে হোসনে আরাকে শোকজ করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিভিল সার্জন মুজিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক তদন্তের পর বুধবার বেলা ১২টার দিকে ‘লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি’ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।