বখাটের সঙ্গেই বাল্যবিয়ে হচ্ছে স্কুলছাত্রীর!
প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৭, ২০:১৫
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী বখাটের উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে এক মাস স্কুলে যায়নি। এই বিরতির পর আবার সে বিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু করে। কিন্তু আবারও উত্ত্যক্তের শিকার হন তিনি। অবশেষে অতিষ্ঠ হয়ে পরিবারের লোকজন ওই বখাটের সঙ্গেই ছাত্রীটির বিয়ে দিতে যাচ্ছেন।
আগামী ২৩ অক্টোবর (সোমবার) বিয়ের আসর বসবে। এদিকে এই বাল্যবিয়ে বন্ধের দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ছাত্রীর ভগ্নিপতি।
জানা যায়, পোশাককর্মী ওই বখাটের সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে ২১ অক্টোবর (শনিবার) দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়। ওই বখাটের বিচার ও এই বাল্যবিয়ে বন্ধের দাবি জানিয়ে ছাত্রীর ভগ্নিপতি নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
ওই ছাত্রীর মা বলেন, বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে তিন মাস ধরে একই এলাকার পোশাককর্মী বখাটে রাজীব হাওলাদার (২৪) উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানালেও তারা কোনো প্রতিকার করেননি। এতে বখাটে রাজীব আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। উত্ত্যক্তের হাত থেকে রক্ষা পেতে মেয়েটি এক মাস বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ রাখে। এরপর ১৪ অক্টোবর সে আবার বিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু করে। কিন্তু ওই দিন বখাটে রাজীব মেয়ের পথ রোধ করেন। কুপ্রস্তাব দেন এবং তার কথা না শুনলে অপূরণীয় ক্ষতির হুমকি দেন। এই পরিস্থিতিতে মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের কাছে ১৫ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দেন তারা। কিন্তু তারাও বখাটের কোনো বিচার করেননি। এই পরিস্থিতিতে মেয়েকে ওই বখাটের সঙ্গেই বিয়ে দিয়ে রেহাই পাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
রাজীব হাওলাদার বলেন, ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ সত্য নয়। বাল্যবিয়ে দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও কেন ছাত্রীকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হবে।
ওসি মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইউএনও ঝুমুর বালা বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধের আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বখাটে সম্পর্কে লিখিত ওই আবেদনে কিছু উল্লেখ নেই। বিষয়টি তদন্তের জন্য মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।