কুড়িগ্রামে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ শিশুসহ হাসপাতালে
প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:০২
কুড়িগ্রামে চিলমারীতে যৌতুকের দাবিতে স্বামীসহ শশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন শিকার হয়ে দুই সপ্তাহ ধরে চিলমারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৯ মাসের শিশু কন্যাকে নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন গৃহবধূ। এ ঘটনায় চিলমারী থানা একটি এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন মুক্তা (২৫) জানান, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের খরখরিয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে রুকুনুজ্জামান রুকুর (৩০) সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয়। সাবিনা চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তপুর উপজেলার চৌরালা গ্রামের ইয়াসিন আলীর মেয়ে। ঢাকায় কাপড়ের ব্যবসা করে তার বাবা। পরিচয়ের পর চিলমারীতে পালিয়ে এসে ২০১৫ সালের ২১ জুলাই এক লাখ ৫০ হাজার ১০১ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সাবিনার নিকট যৌতুক হিসেবে ৩/৪ লাখ টাকা ব্যবসা করার জন্য চেয়ে বসেন তার স্বামী। আর এই যৌতুকের জন্য প্রায় সময় সাবিনার উপর চলত শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন। বাবা-মাকে ছেড়ে পালিয়ে আসা সাবিনা নিরুপায় হয়ে সবকিছু সহ্য করে নেয়। যৌতুকের টাকার জন্য অতিরিক্ত চাপ দিলে সাবিনা তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করলে তার মা ধারদেনা করে কয়েক দফায় স্বামী রুকুকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়।
এরমধ্যে চলতি বছর ১৫ জানুয়ারিতে রিসিকা জামান রোজ জন্ম নেয়। সাংসারিক জীবনে প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টাকা নিয়ে কলহ লেগে থাকত। সর্বশেষ মোমবাতি তৈরির ব্যবসার জন্য যৌতুকের আরো আড়াই লাখ টাকা দাবী করলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায় সাবিনা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামী-ভাসুর-জা সহ কয়েকজন গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে বেধড়ক মারধর করে তাকে। পরদিন সকালে আবার টাকার জন্য সাবিনাকে নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়। এসময় সাবিনার চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে চিলমারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে।
সাবিনার স্বামী রুকু মোবাইল ফোনে জানান, আমি কোন যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করিনি। মেয়েটি আমার সাথে প্রতারণা করে বিয়ে করেছে। আর স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা করে আমাকে ও আমার পরিবারকে হেনস্থা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রমনা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে মেয়েটির অভিভাবক এখানে কেউ থাকে না। মেয়েটি ভর্তি থাকা এবং ওর স্বামী রুকু পলাতক থাকায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ কৃঞ্চ কুমার সরকার জানান, সাবিনার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তার ভাসুর মহসেনুল হককে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।