বিচারের জন্য ডেকে নিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতন!
প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:১৭
বিচারিক কাজের জন্য কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে এক নারীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের কথা গোপন রাখার জন্য নির্যাতন করেছেন বলে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ২ নম্বর চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনসহ দুজনকে আসামি করে ওই নারী বাদী হয়ে সুবর্ণচরের চরজব্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।
পুলিশ অপর আসামি রবিউলকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঐ নারী জানান, গত চার বছর ধরে স্বামীর সাথে কোন যোগাযোগ না থাকায় স্বামীকে ছাড়া নিজের কন্যা সন্তানকে নিয়ে থাকেন তিনি। সম্প্রতি হাতিয়ার নলেরচর ভূমিহীন বাজার এলাকার রবিউল নামের এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয় যা পরে প্রেমের সম্পর্কে রূপ লাভ করে। কিন্তু রবিউল বিবাহিত জানান পর তিনি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
৪ অক্টোবর (বুধবার) সন্ধ্যায় রবিউল ঐ নারীর বাড়িতে চলে আসেন। তখন এলাকার লোকজন তাকে আটক করে বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেলকে জানান। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চেয়ারম্যান চৌকিদার পাঠিয়ে রবিউলকে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যান এবং ওই নারীকেও ইউপি কার্যালয়ে যেতে বলা হয়। পরে ওই নারী, তার এক বোন এবং তিন ভাই ইউপি কার্যালয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান ওই নারীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং রবিউলকে একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করেন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ওই নারীর ভাইবোনদের কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে ওই নারীকে একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন এবং ঘটনাটি সবাইকে জানিয়ে দিবেন বলে ঐ নারী হুমকি দিলে চেয়ারম্যান ওই নারীকেও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। পরে ভোরবেলা তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তখন তিনি থানায় মামলা করেন।
সুবর্ণচরের চরজব্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনসহ দুজনের বিরুদ্ধে এক নারী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মামলার আসামি রবিউলকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামি মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ওই নারীর শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে ধর্ষণের অভিযোগটি সত্যি কি না, তা পরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের আগস্টে ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন এক স্কুলছাত্রীকে সালিসের নামে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ইউপি কার্যালয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ ওঠে।