কিশোরী ধর্ষণের বিচার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা!
প্রকাশ | ০৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:১৮
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলায় এক বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক ইসমাইল হোসেনকে আটক করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেন। পরে সালিসের নামে ওই যুবককে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার লোকজন।
পরে ৩ অক্টোবর (মঙ্গলবার) কিশোরীর মা কোম্পানীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযুক্ত যুবক ইসমাইল হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ইসমাইল দীর্ঘদিন থেকে কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ইসমাইলের অভিভাবকদের বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। গত সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে কিশোরীকে একা পেয়ে ঘরে ভেতরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ইসমাইল। এসময় ভিকটিমের মা ঘরে চলে আসলে বিষয়টি দেখে বাড়ির লোকজনের সহযোগিতায় ইসমাইলকে আটক করে।
কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা বলেন, ২ অক্টোবর (সোমবার) দুপুরে গ্রামে সালিস ছিল। সালিসে চরফকিরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন এবং সদস্য ইসমাঈল হোসেনসহ সমাজের নেতৃস্থানীয় লোকেরা ছিলেন। ইসমাইলকে তারা সালিসে হাজির করেন। ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এই সিদ্ধান্ত না মেনে তারা সালিস ছেড়ে যান। পরে থানায় মামলা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন দাবি করেন, তিনি জরিমানার কোনো সিদ্ধান্ত দেননি, সালিসও করেননি। ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের তিনি বলেছেন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখতে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকলে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানাতে। তার দাবি, তিনি অভিযুক্ত যুবককে ছেড়ে দিতে বলেননি।
তবে ইউপি সদস্য ইসমাঈল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, সালিসে ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। ওই যুবককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্তও দেন চেয়ারম্যান। ধর্ষণের ঘটনা সালিসে মীমাংসা করা বেআইনি, একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এটি করা ঠিক হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সালিসে চেয়ারম্যানই সব। তিনি সিদ্ধান্ত দিলে তা না মানার সুযোগ নেই।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বী বলেন, অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কিশোরীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছেন তারা। ধর্ষণের ঘটনাটি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য সালিসে মীমাংসার চেষ্টা করেছিলেন বলে শুনেছেন তিনি।