‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত-চীনের বক্তব্য বাংলাদেশের বিবেচ্য নয়’
প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:০০
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত ও চীন যা বলছে, তা বাংলাদেশের কাছে বিবেচ্য বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, চীন বা ভারত তাদের কী কথা, কী মত সেটা আমার এত বিবেচ্য বিষয় না। কারণ এটা তাদের যার যার দেশের মতামত।
তবে আমাদের দেশে তারা যখন রোহিঙ্গাদের দেখেছেন, তখন তারা প্রত্যেকেই সহানুভূতিশীল। ভারত চীন সকলেই এগিয়ে এসেছে। তারা রিলিফ পাঠাচ্ছে। সব রকম সহযোগিতা করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, শরণার্থীদের দুর্দশা দেখতে ঢাকায় অবস্থানরত সব কূটনীতিকেরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের শিবিরে গিয়েছেন। তারা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা সবাই রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, এ অধিবেশনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট রোহিঙ্গা সমস্যা তুলে ধরা ও এর সমাধানে বিশ্ববাসীর সহযোগিতা নিশ্চিত করা ছিল আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মিয়ানমারের আট লাখ নাগরিককে আশ্রয় দেওয়ার পর খাদ্য, বাসস্থান, জরুরি ত্রাণ এবং তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশকে জটিল সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এসময় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গাদের খারাপ সময়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে তার পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সবকিছু করার আশ্বাও দিয়েছেন বলে জানান শেখ হাসিনা।
গত প্রায় এক মাসের চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। দেশটিতে জাতিগত নিপীড়নের শিকার এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর আরও প্রায় চার লাখ সদস্যকে কয়েক দশক ধরে আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। ২১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) জাতিসংঘে ভাষণে মিয়ানমারে উৎপীড়নের হাত থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় প্রস্তাব তুলে ধরে মানবিক এই সঙ্কট অবসানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের ত্বরিত পদক্ষেপ চান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘ সভায় যোদ দিতে গত রবিবার নিউ ইয়র্কে শেখ হাসিনা। পাঁচ দিন নিউ ইয়র্কে অবস্থানের ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সংবাদ সম্মেলন করে ওয়াশিংটনে যান তিনি। সেখান থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর রওনা হয়ে ২ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।