টাঙ্গাইলে স্ত্রীকে আগুনে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ
প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:৫৬
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় স্বামীর বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে পেট্রোল ঢেলে আগুনে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) রাতে ঘাটাইল উপজেলার কুরমুসি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে গৃহবধূ মল্লিকাকে (২৫) গুরুতর আহতাবস্থায় ১০ সেপ্টেম্বর (রবিবার) বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। আর মল্লিকার মাদকাসক্ত স্বামী শাহিনকে স্থানীয় লোকজন বাড়িতে আটকে রাখেন।
বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক সাব্বির আহমেদ জানান, মল্লিকার শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।
মল্লিকা জানান, তিনি ৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসায় খাটের উপর শুয়ে ছিলেন। অন্য খাটে তার ৭ মাসের মেয়ে সোহাকে রেখে শাহিন এসে তার পাশে শুয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে গ্যাস লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মল্লিকার ভাসুর সোলায়মান জানান, শাহিন ইয়াবায় আসক্ত। সে সখীপুরের দেওয়ান বেকারিতে চাকরি করত। সম্প্রতি সে এতটাই আসক্ত হয়েছে যে, চাকরি পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রতিদিন ঝগড়া হতো। শাহিনকে ভালো করতে মল্লিকা বাসায় রাখা ইয়াবা পানিতে গুলিয়ে খেয়ে ফেলত। সে বলত, তুমি ইয়াবা খেলে আমিও খাব। সোলায়মানের দাবি, শাহিনকে তিনি নেশা ছাড়ার জন্য ঈদের দিন চর-থাপ্পড় মারেন। ভাইদের এ ঝামেলা মেটানোর জন্য ৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) তাদের দুই বোন ও ভগ্নিপতিরা বাড়িতে আসেন। তারা ভাইদের মধ্যে ঝামেলা মিটমাট করেন। এরপর রাতে মল্লিকা রান্না করলে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে এক প্লেটে বসে রাতের খাবার খান। পরে তারা দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ শাহিন মল্লিকাকে নিয়ে দৌড়ে উঠানে আসেন। এ সময় মল্লিকার গায়ে আগুন জ্বলছিল। পরে পরিবারের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে রাতেই মল্লিকাকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ১০ সেপ্টেম্বর (রবিবার) বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
মল্লিকার শাশুড়ি শরীফুন্নেছা বলেন, ৪ বছর আগে তার ছেলে শাহিনের সঙ্গে কালিহাতী উপজেলার আউলটিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মোস্তফা মিয়ার মেয়ে মল্লিকার বিয়ে হয়। ছেলে অশিক্ষিত ও মাদকাসক্ত- এ কারণে বিয়ের ৪ মাসের মাথায় মোস্তফা মিয়া তার মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে আটকে রাখেন। শাহিনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা করেন। এ মামলায় শাহিন ১১ দিন কারাগারে ছিল। মল্লিকাই তাকে কারাগার থেকে ছাড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। এ ঘটনার পর থেকে মল্লিকার সঙ্গে তার বাবার বাড়ির লোকদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।