‘বিচারহীনতার সংস্কৃতিই দেশজুড়ে ধর্ষণের জন্য দায়ী’
প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:২১
বিচারহীনতার সংস্কৃতিই দেশজুড়ে ধর্ষণের মতো অপরাধ মহামারী আকার ধারণ করেছে বলে উল্লেখ করেছেন নারী আন্দোলনের কর্মীরা। ৮ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণকারী নারী আন্দোলনের কর্মীরা এ দাবি করেন।
নারী বিষয়ক পোর্টাল উইমেন চ্যাপ্টার এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। উইমেন চ্যাপ্টারের সম্পাদক সুপ্রীতি ধর এর সভাপতিত্বে এবং সঙ্গীতা ঘোষের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ফৌজিয়া খন্দকার, উন্নয়নকর্মী ফারহানা হাফিজ, উন্নয়নকর্মী তাহমিনা ইয়াসমিন, অ্যাক্টিভিস্ট নাহিদ সুলতানা, সাদিয়া নাসরিন, ফেরদৌসী রুমি, লীনা পারভীন, লীনা ফেরদৌস, সাংবাদিক ইসরাত জাহান ঊর্মি, উন্নয়ন কর্মী শশাঙ্ক সাদী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান, সাবেক ছাত্রনেতা আকরামুল হক প্রমুখ।
বক্তারা দেশজুড়ে ধর্ষণের মহামারী বন্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুততার সাথে এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে নারীসহ প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়া কিন্তু রাষ্ট্র তা দিতে ব্যর্থ। আজ দেশজুড়ে যে ধর্ষণকাণ্ড ঘটে চলছে তার জন্য রাষ্ট্রই দায়ী। আর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এর দায় এড়াতে পারেন না।
বক্তারা রূপা প্রামাণিকসহ হত্যা-ধর্ষণের শিকার সব নারীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘রাষ্ট্র যেন বুঝতেই চায় না নারীরাও মানুষ। আজ ধর্ষণের মতো অপরাধের জন্য বিচার চাইতে হচ্ছে অথচ এটা তো নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রাপ্য।’
বক্তারা এ সময় অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের দেশের আইনগুলি পুরুষতান্ত্রিক আর ধর্ষকবান্ধব বলেই ধর্ষকরা জামিন পেয়ে যায়। ধর্ষণের মনস্তত্ত্ব কিভাবে গড়ে ওঠে, তা নিয়ে কথা বলা জরুরি। ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সরব নয়, নারী সংগঠনগুলোও তেমন সরব নয়। ক্ষমতাসীনদের লোকজনরাই ধর্ষণগুলো করছে। বিচারব্যবস্থা রাষ্ট্রচালকদের সাফাই গাইছে।’ যে বাসে রূপা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, তার রুট পারমিট বাতিলের দাবি জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে উইমেন চ্যাপ্টারের সম্পাদক সুপ্রীতি ধর বলেন, রূপা ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার বিচার যে কোন মূল্যে আমাদের আদায় করে নিতে হবে। রূপা ধর্ষণ এবং হত্যা মামলায় কোন আইনজীবী যাতে আসামীদের পক্ষে আদালতে না দাঁড়ায়, সেজন্য প্রয়োজনে টাঙ্গাইলে গিয়ে আমরা সমাবেশ করতেও আমরা প্রস্তুত।