নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত রূপা
প্রকাশ | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:৪৫
নিজ গ্রাম সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের আসানবাড়ির কবরস্থানে বাবার পাশেই সমাহিত হলেন টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার জাকিয়া সুলতানা রূপা। ৩১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাত ৮টার দিকে জানাজা শেষে তার লাশ সেখানে দাফন করা হয়।
তাড়াশের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তার হোসেন মুক্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এসময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক আফসার আলী, উপজেলা যুবদল সেক্রেটারি আমিনুর রহমান ও তাড়াশ থানার উপ-পরিদর্শক আখিরুল ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান মুক্তার হোসেন মুক্তা।
মুক্তার হোসেন মুক্তা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রূপার ভাই হাফিজুর রহমান লাশ নিয়ে আসানবাড়ি গ্রামে ফেরেন। পরে রাত ৮টার দিকে জানাজা শেষে রূপাকে দাফন করা হয়। লাশ সৎকারের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রূপার স্বজনদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যায় রূপার লাশ আসানবাড়িতে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন ও গ্রামবাসীরা। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই রূপাকে শেষ বারের মতো দেখতে ছুটে আসেন। এসময় রূপার ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল হয়।
উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট (শুক্রবার) রাত ১১টার দিকে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকার বনাঞ্চলের রাস্তার ধারে এক তরুণীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে মধুপুর থানা পুলিশ।
প্রাথমিক পর্যায়ে লাশের পরিচয় না মেলায় শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারীশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রিয় গোরস্থানে দাফন করে পুলিশ।
তরুণীর বড় ভাই গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে ২৮ আগস্ট (সোমবার) রাতে মধুপুর থানায় উপস্থিত হয়ে লাশের ছবি দেখে পরিচয় সনাক্ত করে। পরে তদন্তে ধর্ষণ ও হত্যার ব্যাপারটি সামনে আসে।
এই ঘটনায় আটক ৫ আসামিই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
৩১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বিকালে ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে দাফনের চার দিন পর আদালতের নির্দেশে টাঙ্গাইল শহরের কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে রূপার লাশ তোলা হয়। এসময় টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা আব্দুর রহিম সুজন উপস্থিত ছিলেন।