মেয়ের ধর্ষণের বিচার চাইতে এসে গরুর চিন্তায় অস্থির মা
প্রকাশ | ২৭ আগস্ট ২০১৭, ১৭:৩৪
১৬ বছরের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করেছে প্রভাবশালী দুর্বৃত্তরা। বিচার চাইতে থানায় এসেছেন মা। যেহেতু অপরাধীরা প্রভাবশালী, তাই তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার আগে বেশ আতঙ্কিত তিনি। তবে তার চেয়েও আতঙ্কিত তাঁর পেলে-পুষে বড় করা সাতটি গরুর ভবিষ্যৎ নিয়ে। যেগুলো আসলে তাঁর খেয়েপরে বেঁচে থাকার সম্বলও।
এদিক ওদিক তাকিয়ে আতঙ্কিত কণ্ঠে বললেন, ‘আমার গরুগুলার কিছু হইব না তো, আমি সবকিছুই কমু।’
গত ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরদিন ২৫ আগস্ট (শুক্রবার) বিকেলে ঘটনার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানেই এসব কথা বলেন ওই মা।
কিশোরীর মা জানান, ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাতে তাঁর মেয়েকে বাজার থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় সজীবসহ (২২) অন্যরা। সেখানে পরিত্যক্ত একটি ঘরে মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘরটি স্থানীয় মাদকাসক্তদের আড্ডাখানা হিসেবে পরিচিত। পরে সেখানে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের ভবিষ্যৎ বিপদের মুখে পড়বে এবং সজীবসহ তাঁর সঙ্গীরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে শুরুতে মুখ খোলেননি বলে জানালেন এই মা। পরে ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেয়। এরপরেই থানায় আসেন বলে জানান তিনি।
থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে ওই মা আরো জানান, তাঁর বাড়িতে সাতটি গরু আছে। এগুলোই তাঁর সম্বল। অভিযুক্তরা এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। ঘটনার পর তাঁরা ফোনে ও ডেকে নিয়ে তাঁকে গালাগালি করেছে। তিনি বলেন, ‘আমি সব বলুম, আমার গরুগুলার কিছু যাতে না হয়, আমি এর বিচার চাই।’
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে এলাকায় পুলিশের একাধিক দল কাজ করেছে। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সজীবের মা নয়নতারাকে (৪৫) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সজীবের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ থানায় আগেও মামলা হয়েছে জানিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশের বিশেষ অভিযানে সজীবকে ২৬ আগস্ট (শনিবার) ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নির্যাতিত কিশোরী পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলেও জানালেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
সূত্র: এনটিভি