টাঙ্গাইলের বাসাইলে পানিবন্দি ২০ হাজার পরিবার

প্রকাশ | ২৪ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৫১

অনলাইন ডেস্ক

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের নওগাঁ এবং বাসাইল উপজেলার জশিহাটিতে ঝিনাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে বাসাইল উপজেলার ৭০টিরও বেশি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 

এসব গ্রামের আমন ধানের বীজতলা এবং আবাদী জমির আমন ধান বিনষ্টসহ উঠতি সবজি চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত ১৬ আগস্ট নওগাঁ-জশিহাটি ঝিনাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে এসব এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

অনেকে নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যের উচু বাড়ি, মাঠেও অবস্থান নিয়েছে। পানিবন্দি মানুষেরা অসহায় হয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। হঠাৎ করে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করায় হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

জানা যায়, উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নে দোহার, হাকিমপুর, আইসড়া একঢালা, জশিহাটি, ময়থা, নেধার, তিরঞ্চ, ফুলকী, করটিয়াপাড়া, বালিয়া, খাটড়া, মুরাকৈসহ প্রায় ১৫টি গ্রামের প্রয় ৬ হাজার পরিবার, কাঞ্চনপুর ইউনিয়নে সৈদামপুর, রাশড়া, পৌলী, যৌতুকী, তারাবাড়ি, কর্মকারপাড়া, কাজিরাপাড়া, আদাজান, সিংগারডাকসহ প্রায় ১৫টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার, কাশিল ইউনিয়নের বাঘিল-ফুলবাড়ি, পিচুড়ী, বাহাতৈর, কাশিল দক্ষিণপাড়া, পূর্বপাড়াসহ প্রায় ১০টি গ্রামের প্রায় ২৫শ পরিবার, কাউলজানী ইউনিয়নেও প্রায় ৩ হাজার পরিবার, হাবলা ইউনিয়নে প্রায় ২২শ, বাসাইল সদর ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার, বাসাইল পৌরসভার মাউজখাড়া, বর্ণীকিশোরী, বালিনা, বাসাইল দক্ষিণপাড়া, সিংবাড়ী, বাসাইল পালবাড়ী, মাঝিবাড়িসহ প্রায় ১০ এলাকায় প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানিবন্দি মানুষগুলোর সাহায্যার্থে সরকারি-বেরসরকারি পর্যায়ে এখনো কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছে বন্যার্তরা। এদিকে বন্যার প্রভাবে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই।

এলাকায় পানি ডুকে পড়ায় হাজার হাজার একর জমির আউশ এবং আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার বন্যায় জমির আবাদী ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

এদিকে কাজ না থাকায় বর্তমানে অনাহারে দিন চালাতে হচ্ছে অনেকেরই। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার আর বিশুদ্ধ পানির সংকট। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরণের পানিবাহিত রোগ।

বন্যার পানি প্রবেশ করায় উপজেলার ৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। পাট, ধান, সবজি ও বীজতলাসহ ৩ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী এখন পর্যন্ত না পৌঁছায় অনেক অসহায় ও গরিব পরিবারের লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকটে পড়েছেন তারা। বন্যার কারণে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট।
ফুলকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আমার এলাকায় প্রায় ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার্ত মানুষেরা সরকারি-বেরসরকারি পর্যায়ে এখনো কোন ত্রাণ পাননি। বন্যার্তদেরকে সরকারি ত্রাণ বরাদ্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সায়মা আক্তার বলেন, বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণসহ অন্যান্য সাহায্যের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আশা করি দ্রুতই তাদের মাঝে ত্রাণ পৌছাতে পারবো।