‘মায়ের রান্না আর খাওয়া হবেনা কখনো’
প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০১৬, ১৩:৩৫ | আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬, ১৪:৩৪
‘ঈদের দিন মা’ও সেমাই রান্না করেছিল। ঈদে খাওয়া দাওয়া হবে। ছুটিতে আসার পর মায়ের হাতে রান্না খাওয়ার জন্য অপেক্ষায়। মা রুটি বানানোর জন্য ময়দা মেখে কেন জানি রান্নাঘর থেকে শোয়ার ঘরে গেছিলেন। তখন বাইরে গোলাগুলি চলছিল শুনছিলাম। কিন্তু সে সময় যে এমন একটা ঘটনা ঘটে যাবে কল্পনা করিনি। জানালা দিয়ে একটা গুলি এসে ঠিক মাথায় লাগে মায়ের। ঘরের ভেতরেই পড়ে যান তিনি। মায়ের রক্তেই তাঁর ঘরের মেঝে ভেসে গেছে। আমরা তাকিয়েই থাকলাম, আমার মা চলে গেল। তাঁর হাতে তৈরি মাখানো ময়দা খামিটাও তেমনই রয়ে গেল। আমার মায়ের রান্না আর খাওয়া হবেনা কখনো।’
কথা হচ্ছিল শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে সন্ত্রাসী ও পুলিশের গোলাগুলিতে নিহত ঝর্ণা রানী ভৌমিকের বড় ছেলে বাসুদেব ভৌমিকের সাথে। বাসুদেব ঢাকার একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছেন। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠের কিছু দূরেই সবুজবাগ মহল্লায় তাঁদের বাড়ি।
বাসুদেব বলেন, ‘মা নেই, এটা বিশ্বাস করবো কি করে? আমরা তো কারো ক্ষতি করিনি! তবুও আমার মাকে এভাবে মরতে হলো। এ দেশে কি আমরা বাঁচতে পারবো না? হয় আমাদের কোপাইয়া মারবে। নইলে এভাবে বেফাঁস গুলি করে মারবে। ”
ঝর্ণার স্বামী গৌরাঙ্গ ভৌমিক শোকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়েন। সারা পরিবারজুড়ে আহাজারি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের কাছে টহলরত পুলিশের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় পুলিশের ২ সদস্য, ১ নারী ও এক হামলাকারীসহ ৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয় আরো অনেকজন।