সুনামগঞ্জে উত্তাল হাওর, গৃহহীন মানুষ
প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০১৭, ০২:৩০
দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার হাজার হাজার মানুষের। বছরের শুরুতে আগাম বন্যায় নষ্ট হয়েছে মাঠের ফসল। আর এখন হাওরের উত্তাল ঢেউয়ে ভাঙছে বসতভিটে। ফলে গৃহহীন হচ্ছেন সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য অঞ্জনা তালুকদার বলেন, ‘হাওরের উত্তাল ঢেউয়ে বসতভিটে ভেঙে গেছে। তাই গ্রামের বাড়ি ছেড়ে জামালগঞ্জ শহরে চলে এসেছি।’
এলাকাবাসী হাওরের ঢেউয়ে জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ও ফেনারবাঁক ইউনিয়নের হটামারা, যশমন্তপুর, কৃষ্টপুর, শ্রীমন্তপুর, চাটনীপাড়া, হটামারা হকিয়ার ডুবি, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের মুসলিমপুর, ঝুনুপুর, ইনসানপুর, লক্ষ্মীপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামের ৬ শতাধিক মানুষের বসতভিটে ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে।
হটামারা গ্রামের নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘হাওরের উত্তাল ঢেউয়ে আমার বসত ভিটে মাত্র তিনদিনের ব্যাবধানে ভেঙে গেছে। তাই এখন নয়াহালট গ্রামের সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছি।’
পশ্চিম ফেনারবাঁক গ্রামের দিলারা বেগম বলেন, ‘ঘরে ধানচাল কিছুই নেই। তারপর আবার ভাঙনে বসতভিটে হারালাম।’
একই গ্রামের রবি আউয়াল বলেন, ‘যাওনের আর কোনও জায়গা নাই। চারদিকে পানি আর পানি। এখন পানির মধ্যেই থাকতে হবে। বসতবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় কালীবাড়ি নতুনহাটি গ্রামের আশ্রব আলীর বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছি।’
বিষ্ণুপুর গ্রামের সন্তুষ, গণেশ ও মঞ্জু জানান, পাকনার হাওরের ঢেউ তাদের বসত ভিটে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন সরকারি উচু জায়গায় ঢেরা তৈরি করে বসবাস করছেন তারা।
জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ মাহমুদ সাজিব বলেন, ‘বছরের শুরুতে আগাম বন্যার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ প্রয়োজনীয় চালিয়া বন না পাওয়ায় প্রতিরক্ষা বাঁধ বানাতে পারেননি।’
ফেনারবাঁক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অসীম তালুকদার বলেন, ‘ঢেউয়ের আঘাত থেকে বসত রক্ষা করার এ মুহূর্তে কোনও উপায় আছে বলে মনে হয় না। শুষ্ক মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কিছু একটা করা যাবে।’