খুনী নূর চৌধুরীকে ফেরত চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০১৭, ২৩:১৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনী নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে কানাডার প্রতি তার আহবান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
১৩ আগস্ট (রবিবার) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কানাডার বিদায়ী হাই কমিশনার বোনইু-পিয়েরে লারামি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে এলে তিনি এই আহবান জানান।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী নূর চৌধুরী ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিচারের মুখোমুখী হওয়ার ভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যায় এবং বর্তমানে সে কানাডার ‘প্রি-রিমুভাল রিস্ক এ্যাসেসমেন্ট ল’এর সুযোগ নিয়ে সেখানে অবস্থান করছে।
প্রধানমন্ত্রীর এ আহবানের প্রেক্ষিতে কানাডার হাই কমিশনার বলেন, তিনি বাংলাদেশের এই উদ্বেগের কথা কানাডার যথাযথ কতৃর্পক্ষকে অবহিত করবেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম একথা জানান।
আগামী নির্বাচনের বিষয়টিও তাদের আলোচনায় স্থান পায় উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, তারা একটি অন্তভূক্তিমূলক স্বচ্ছ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়েও মত বিনিময় করেন।
নির্বাচন পদ্ধতিতে স্বচ্ছ ব্যালট বক্স এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নে তার সরকারের উদ্যোগ প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর দল অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে। এরআগে ’৭৫ থেকে ’৯০ সাল পর্যন্ত দেশে কোন স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া ছিল না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
গত নির্বাচনের প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেজন্য তাঁর সরকার গত নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণে গঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকারে তাদের যোগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়।
তিনি বলেন, আমরা বিএনপিকে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারে আসতে এবং সরকারের যেকোন মন্ত্রণালয় গ্রহণের প্রস্তাব দেই। অথচ, তারা অংশ না নিয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করে।
বৈঠকে সন্ত্রাস মোকাবেলায় সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার এজন্য সকল শ্রেণি পেশা, গোত্র, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করে গণসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন।
কানাডার হাইকমিশনার এদেশে দায়িত্ব পালনকালে সবরকমের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং মাতৃভাষা, ইতিহাস ও কৃষ্টির প্রতি বাংলাদেশের জনগণের ভালবাসা এবং মাতৃভাষা রক্ষায় উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেয়ার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
কানাডা বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশগুলোর অন্যতম উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমশই গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নে তার সরকারের সহযোগিতার কথা পুণর্ব্যক্ত করেন।
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে হাই কমিশনার এ বছর ঢাকায় সফলভাবে আইপিইউ সম্মেলন আয়োজনেরও প্রশংসা করেন। আগামী দু’বছরের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।