আটকে রেখে ৭ মাস ধরে ছাত্রীকে ধর্ষণ

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৬:২০ | আপডেট: ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৭:৩৩

অনলাইন ডেস্ক

এই বাড়িতেই সাত মাস ধরে নিপীড়নের শিকার হয় কলেজছাত্রী

সখীপুরে নিখোঁজের সাত মাস পর একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে অসুস্থ অবস্থায় এক কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে অপহরণের পর আটক রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, গত ৩০ জুলাই (রবিবার) বিকেলে শিশুরা পরিত্যক্ত ওই বাড়িতে খেলতে গিয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে মেয়েটিকে দেখতে পায়। শিশুরা মেয়েটির পরিবারকে জানালে লোকজন নিয়ে সন্ধ্যায় ওই ঘরের তালা ভেঙে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর প্রথমে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় ৩১ জুলাই (সোমবার) বাদলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মেয়েটির ভাই মামলা করেছেন।

পুলিশ ও নির্যাতিত ছাত্রীর পরিবার সূত্র জানায়, সখীপুর উপজেলার রতনপুর কাশেমবাজার গ্রামের দরবেশ আলীর ছেলে দুই সন্তানের জনক বাদল মিয়া। ওই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে বাদল মিয়ার সখ্য ছিল। একপর্যায়ে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্কের কথা জেনে সে তাদের বিয়ে দেওয়ার কথা বলে গত ১১ জানুয়ারি ভোরে গোপনে মেয়েটিকে তার (বাদল) পরিত্যক্ত ওই বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে প্রায় সাত মাস ধরে ধর্ষণ করছিল বাদল। এর মধ্যে চার মাস মেয়েটির বাড়িতেই ছিল ধর্ষক বাদল। ওই সময় মেয়েটির পরিবারকে নানাভাবে ভুল বুঝিয়েছে সে। চার মাস পর সে একদিন মেয়েটির বাড়ি থেকে চলে যায়।

মেয়েটি জানায়, গেল বছর আগস্টের ফেসবুকের মাধ্যমে টাঙ্গাইল শহরের এক কলেজছাত্রের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একসময় সে (মেয়েটি) তার প্রেমিককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি সে পরিবারের কাউকে বলতে না পারায় বাদল মিয়াকে তার ইচ্ছার কথা জানায়। ঘটনা শুনে বাদল বিয়ের ব্যবস্থা করে দেবে বলে তাকে আশ্বস্ত করে।

মেয়েটি জানায়, বাদলের কথামতো গত ১০ জানুয়ারি ব্যাগে তার জামাকাপড় ও গয়না ভরে পরদিন ভোর ৫টার বাদলের ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে যায়। সেখানে আগেই বাদল উপস্থিত ছিল। পরে বাদল তাকে বলে, বিয়ের সব ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। তুই কোনোভাবে সাড়া-শব্দ করিস না। কেউ বুঝতে পারলে বিয়ে আর হবে না। এমনকি ওর (প্রেমিক) সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ করতেও নিষেধ করে। 

মেয়েটি জানায়, এরপর বাদল বিয়ের কাজ এগোচ্ছে বলে বলে দিন পার করতে থাকে। আর খাবারের সঙ্গে কী যেন মিশিয়ে দেয়। খাবার খাওয়ার পর তার ঝিমুনি আসে। এরই মধ্যে দিন বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। একদিন নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে বাদল মিয়া তাকে ধর্ষণ করে। এরপর থেকে মাঝেমধ্যে সে এভাবে তাকে নির্যাতন করতে থাকে। আস্তে আস্তে সে ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ে। 

ছাত্রীর ভাই জানান, দীর্ঘদিন আটক রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ফলে বোন এখন মৃত্যুশয্যায়।

সখীপুর থানার ওসি মাকছুদুল আলম জানান, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।