বাড্ডায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা: শিপন ৬ দিনের রিমান্ডে
প্রকাশ | ০১ আগস্ট ২০১৭, ০২:৪৫
গত ৩০ জুলাই (রবিবার) বিকালে বাড্ডার আদর্শনগরের ৪ নম্বর সড়কের পাশে একটি বাসায় তানহা নামের পৌনে চার বছরের এক শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতনের পর শিশুটিকে পাশের বাড়ির বাথরুমে ফেলে রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে স্বজনরা শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার শিপনের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ৩১ জুলাই (সোমবার) ঢাকা মহানগর হাকিম আবদুল্লাহ আল মাসুদ এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, তানহার বাবা মেহেদী হাসান প্রাইভেটকার চালক। মা সুলতানা বেগম গৃহিণী।
সুলতানা বেগম জানান, তারা যে বাড়িতে থাকেন ওই বাড়িতে কলি নামে এক নারী ও তার স্বামী ভাড়া থাকতেন। তারা দু’দিন আগে এ বাসা থেকে ১০০ গজ দূরে পাশের বাড়িতে ভাড়ায় উঠেছেন।
তিনি বলেন, রবিবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে তানহা আমাকে বলে কলি আন্টির বাসায় বেড়াতে যাব। আমি বলি যাও, তাড়াতাড়ি চলে এসো। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে এলেও ফিরছিল না তানহা। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে পাশের বাড়ির এক নারী বাথরুমে গিয়ে দেখেন টয়লেটের কমোডে মাথা গোজানো অবস্থায় পড়ে আছে তানহা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি এসে খবর দেন। এরপর গিয়ে দেখি মেয়ে আমার সেখানে পড়ে আছে আর তার গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
সুলতানা বেগম বলেন, প্রথমে স্থানীয় মেডিলিংক হাসপাতালে নিয়ে যাই, তারপর আল সামি ক্লিনিক এবং পরে বাড্ডা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু কোনো হাসপাতালের চিকিৎসকই দেখতে রাজি হলেন না। তাদের একই কথা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে বুঝতে পারলাম আমার মেয়ে মারা গেছে। এরপর তাকে বাসায় নিয়ে আসি।
শিশু তানহাকে হত্যার এই ঘটনায় ৩১ জুলাই (সোমবার) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন জানান, তানহা তার বাবা-মার সঙ্গে বাড্ডার আদর্শনগরের মিনহাজ নামের এক ব্যক্তির বাসায় ভাড়া থাকত। রবিবার পার্শ্ববর্তী আমিন নামের একজনের বাসায় জাহেদা আক্তার কলি নামের নতুন ভাড়াটিয়া আসে। গ্রেপ্তার শিপন স্ত্রীসহ ওই বাসার আলাদা একটি রুমে ভাড়া থাকে। তানহা তার মাকে বলে কলি আন্টির বাসায় বেড়াতে যাচ্ছে সে। ফেরার পথে শিপন তাকে ভাত খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে নিয়ে ধর্ষণ করে।
বাড্ডা থানার ওসি আবদুল জলিল জানান, শিপন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। সে বিবাহিত। রবিবার তার স্ত্রী বাসার বাইরে ছিল। এই সময় সন্ধ্যায় শিশুটিকে তার বাসার কাছে পেয়ে ঘরে নিয়ে যায় সে। শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন চালানোর পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে শিশুটির লাশ বাসার বাথরুমে ফেলে রাখে। রবিবার গভীর রাতেই বাড্ডা এলাকা থেকে শিপনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষে থেকে আরও জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মো. শিপন। ৩০ জুলাই (রবিবার) রাত ১টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
তানহার বাবা মেহেদী হাসান বলেন, আমার মেয়ে গেছে, আর তো মেয়ে পাব না। আমি আমার মেয়ে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।