স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা, জুতার মালা পড়িয়ে গ্রাম প্রদক্ষিণ
প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০১৭, ১৬:৪৮
গাজীপুরের শ্রীপুরে স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে লাঠিপেটা ও জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘুরানোর পর তার পাঁচ গণ্ডা জমি ওই ছাত্রীর নামে লিখে নিয়েছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মাতব্বররা। অভিযুক্ত যুবকের নাম আনোয়ার হোসেন (২৫)। সে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল বারেক মিয়ার ছেলে।
২৪ জুলাই (সোমবার) উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবকের ভাই সানোয়ার হোসেন জানান। এ ঘটনার পর রাতে মেয়েটির নানা শ্রীপুর থানায় আনোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
গাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শ্লীলতাহানির চেষ্টা করায় সালিশের মাধ্যমে জমি লিখে নেওয়া হয়েছে।
ওই ছাত্রীর মামা বলেন, ২৩ জুলাই (রবিবার) সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে আনোয়ার তার ভাগ্নির পথরোধ করে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আনোয়ার পালিয়ে যায়। পরে আমাদের অভিযোগের পর ২৪ জুলাই (সোমবার) বেলা ১১টায় নয়াপাড়া বাজারে সালিশের আয়োজন করে চেয়ারম্যান। সালিশের সিদ্ধান্ত মতে আনোয়ারের পাঁচ গণ্ডা জমি আমার ভাগ্নির নামে লিখে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবকের ভাই সানোয়ার হোসেন বলেন, শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান, স্থানীয় মাতাব্বার আব্দুল আওয়ালসহ বেশ কয়েজন মাতব্বর আমার ভাইকে জুতার মালা পরিয়ে লাঠিপেঠা করে গ্রাম ঘুরান। পরে জোর করে পাঁচ গণ্ডা জমি লিখে নেন এবং মেয়ের নানাকে দিয়ে আনোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছেন তারা।
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ উঠায় ওই যুবককে চেয়ারম্যান ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তাকে পুলিশে না দিয়ে নিজেরাই বিচার করেছেন কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এলাকার চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাই হয়েছে। তার মতের বিরুদ্ধে আমরা যাইনি।”
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বলেন, মেয়েটির কেউ নেই। সে নানার বাড়িতে থেকে লেখা পড়া করে। আমি স্থানীয় সরকারের লোক হিসেবে ওই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে আনোয়ারের পাঁচ গণ্ডা জমি মেয়ের নামে দলিল করে নিয়েছি।
শ্রীপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, রাতে নানা আনোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমের তার জমি লিখে নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। এ কাজ করে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।