ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত প্রতিহত করব: হাসিনা
প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০১৬, ২০:০৯
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ঠেকাতে জনগণকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর গুলশান ২ এর ৭৯ নং সড়কে হলি আর্টিসান রেস্তোঁরায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে তিনি এই কথা বলেন।
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের উপর আস্থা রাখুন। ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আমরা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
‘মুষ্টিমেয়’ বিপথগামী সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। তিনি বলেন, “দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যে কোনো মূল্যে আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত প্রতিহত করব।”
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি, কম্যুনিটি পুলিশ এবং সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে সন্ত্রাস মোকাবেলায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে বিপথগামী যুবকদের সঠিক পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি। সন্তানরা যেন বিপথে না যায়, সেদিকে নজর রাখতে অভিভাবকদের প্রতিও আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
যারা কিশোর ও যুবকদের বিপথে পরিচালিত করছে তাদের উদ্দেশে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,“মানুষকে হত্যা করে কী অর্জন করতে চান? ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামের নামে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন।”
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, “আসুন, আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করি।”
সন্ত্রাসীদের সমূলে নির্মূল করে বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করার দৃঢ় সংকল্প জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করতে পারবে না।”
হামলার ঘটনাকে ‘বর্বর ও কাপুরুষোচিত’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশে এই হামলা নজিরবিহীন"।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কমান্ডো অভিযানে তিন বিদেশিসহ ১৩ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের তথ্য তুলে ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাজের প্রশংসা করেন। এই ঘটনায় নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার সাহসিকতার প্রশংসাও করেন তিনি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ৮/৯ জন অস্ত্রধারী যুবক 'আল্লাহু আকবর' বলে স্লোগান দিতে দিতে হলি আর্টিসান নামক ঐ রেস্তোঁরায় আক্রমন চালায়। এসময় তারা ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে সবাইকে জিম্মি করে নেয় ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন বনানী থানার ওসি সালাহ উদ্দিন ও ডিবির সহকারী কমিশনার রবিউল। পুলিশ সদস্য সহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
উদ্ধার অভিযান শেষে দুপুরে ২০ জন বিদেশির জবাই করা লাশ উদ্ধারের কথা জানায় আইএসপিআর। ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে শ্রীলঙ্কার দুজন ও জাপানের এক নাগরিক রয়েছেন। তবে এখনো ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকে জীবিত নাকি মৃত তা জানা যায়নি।