৩৮০০ বছরের পুরনো দেয়ালচিত্রের সন্ধান মিসরে
প্রকাশ | ০৪ নভেম্বর ২০১৬, ১৩:৫৯
প্রাচীন কালের মিসরীয় নৌকার ১২০টিরও বেশি দেয়ালচিত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। অ্যাবিডোসের একটি ভবনের ভেতরে এই চিত্রগুলো আবিষ্কৃত হয়। ভবনটির বয়স ৩৮০০ বছরেরও বেশি। এটি ফারাও তৃতীয় সেনওসরাত এর সমাধিস্থলের পাশে অবস্থিত। ছবিগুলো ভবনটির সাদা প্লাস্টার করা দেয়ালে খোদাই করা আছে। সমাধিস্থলের ভেতরে একটি বাস্তব কাঠের নৌকার ধ্বংসাবেশেষও পাওয়া গেছে।
সবচেয়ে বড় চিত্রটি ৫ ফুট লম্বা। এতে বড়, সুনির্মিত নৌকার চিত্র তুলে ধরা হয়। চিত্রগুলোতে নৌকার মাস্তুল, পাল, দড়ি, ডেকহাউজ/কেবিন, রাডার, দাঁড় এবং দাঁড়টানিয়েদের ছবিও রয়েছে। কিছু কিছু ছবি ছোট এবং সরল। সবচেয়ে ছোট চিত্রটির দৈর্ঘ্য ৪ ইঞ্চি। বর্তমানে মাত্র ১২০টি চিত্র টিকে থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে, প্রাচীনকালে হয়ত ভবনটির দেয়ালে আরো বেশিসংখ্যক চিত্র খোদাই করা ছিল।
নৌকা ছাড়াও ভবনটির দেয়ালে হরিণ, গাবাদি পশু এবং ফুলের ছবিও খোদাই করা আছে। এ ছাড়া ভবনটির প্রবেশ পশের কাছেই বেশ কিছু মাটির পাত্র পাওয়া গেছে। এই আবিষ্কারের ফলে প্রত্মতাত্ত্বিকদের মধ্যে বেশ কিছু রহস্যেরও জন্ম হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো খননকার্যের মাধ্যমে এগুলোর সমাধান সম্ভব হবে।
প্রত্মতাত্ত্বিকরা জানেন না চিত্রগুলো কারা খোদাই করেছে বা কেন তারা এগুলো খোদাই করেছে। তবে গবেষকদের ধারণা একাধিক লোক বেশ অল্পসময়ের মধ্যেই চিত্রগুলো খোদাই করেছেন।
প্রত্মতাত্ত্বিকরা দেখতে পেয়েছেন, ফারাও তৃতীয় সেনওসরাত এর মৃত্যুর পর তার সমাধিস্থলের ভেতরে বেশ কিছুসংখ্যক লোক প্রবেশ করেছে। আর মাটির পাত্রগুলো কী কারণে সেখানে রাখা হয়েছে তার পেছনের উদ্দেশ্যও পরিষ্কার নয়। ধারণা করা হচ্ছে, সমাধিস্থলের ভেতরে যে নৌকাটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে মরুভূমির মধ্য দিয়ে কাঠের স্লেজে চড়িয়ে সেটিকে টেনে আনার সময় ওই পাত্রগুলোতে পানি এবং অন্যান্য পিচ্ছিলকারক পদার্থ বহন করা হয়েছে। যাতে সেসবের ব্যবহার করে নৌকাটিকে সহজেই টেনে আনা যায়।
গবেষকদের দলটি ভবিষ্যতেও আরও খনন অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে যাতে উদ্ভূত রহস্যগুলো সমাধান করা যায়।
২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে মিসরের পুরাতত্ব মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ভবনটিতে খনন অভিযান পরিচালনা করেন ওই গবেষকদল।