‘প্রেমের জন্য দ্বীপ’

প্রকাশ | ০৫ অক্টোবর ২০১৬, ০২:০২

অনলাইন ডেস্ক

সম্পর্কটা পরিবার মেনে নিচ্ছে না। ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় সামাজিকভাবেও বাধার মুখে পড়ছে। এমন জুটিদের বিয়ের জন্য সব আয়োজন রয়েছে এই দ্বীপে। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, নাগরিক আচারের মধ্য দিয়ে কেউ সহজে বিয়ে করতে চাইলে এটা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্থান।

সাইপ্রাসের এই দ্বীপে প্রতি বছর মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রায় তিন হাজার জুটি বিয়ে করতে আসেন। একে বলা হচ্ছে সিভিল ম্যারেজ।

এ রকম এক জুটি র‌্যাচেল ও আব্দুল কাদের। তারা লেবাননের নাগরিক। সমাজ মেনে না নেওয়ায় বিয়ে করতে যেতে হয়েছে সাইপ্রাসের ওই দ্বীপে। বিয়ে অনুষ্ঠানে কোনো প্রচলিত বিয়ের পোশাক তারা পরেনি। দুজনের পরনে টি-শার্ট আর জিন্স। নিজেদের আরবি ভাষায় কথা না বলে বলছিলেন ইংরেজিতে। রেজিস্ট্রার যখন তাদের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন তখন কিন্তু সেখানে কেউই ছিল না। এখানের বিয়েগুলো এমনই হয়। কিন্তু তারা একটা আইনি বৈধতা পান। লেবাননে এ রকম প্রেম কাহিনী অনেক আছে। সেদেশে ধর্মীয় গোষ্ঠীই ১৮টি। 

মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতির দেশ এটি। র্যা চেল একজন ম্যারোনাইট ক্রিশ্চিয়ান আর আব্দুল কাদের সুন্নি মুসলিম। দু’জনের কেউই তাদের পিতামাতার ধর্ম ছাড়তে চান না আবার তারা বিয়েও করতে চান ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই। এ কারণেই সাইপ্রাসে আসা। প্রচুর সংখ্যায় বিদেশি সাইপ্রাসে আসেন শুধু বিয়ে করার জন্যে। 

মধ্যপ্রাচ্য থেকে যারা আসেন তাদের বেশিরভাগই লেবানন ও ইসরাইলের নাগরিক। তারা মনে করেন এখানে বিয়ে করা অনেক সহজ ও সস্তা এবং সবচেয়ে বড় কথা এই বিয়ে নিজেদের দেশে আইনিভাবেও বৈধ। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সিভিল ম্যারেজকে বৈধ করার জন্যে চেষ্টা করলেও ধর্মীয় ব্যক্তিদের (আলেম) আপত্তির কারণে সম্ভব হয়নি। Cyprus কোনো কোনো দেশে মুসলিম অথবা শরিয়া আইনে বিয়ে হয়। অন্যদের জন্যে আছে অটোমানের সময় বেঁধে দেওয়া নিয়ম-কানুন। এর ফলে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী তাদের নিজেদের মতো করে আদালত চালাতে ও পারিবারিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারেন।

ইসরাইলি এক দম্পতি সাইপ্রাসে এসেছিলেন বিয়ে করতে। কারণ তারা সেক্যুলার এবং সিভিল ম্যারেজকেই অগ্রাধিকার দেন। তারা বলেন, ইসরাইলে শুধু ধর্মীয়ভাবেই বিয়ে হতে পারে। যারা এভাবে বিয়ে করতে চান না তাদের সেখানে বিয়ে করার উপায় নেই। তবে নিজ দেশ থেকে কিছু মানুষ ব্যক্তি স্বাধীনতা বঞ্চিত হয়ে অন্য একটি দেশে যাওয়াটা সেই দেশের জন্য একটি নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করে দিচ্ছে এতে সন্দেহ নেই। অন্যদিকে এর ফলে সাইপ্রাস অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্চে। একই সঙ্গে দেশটি পরিচিত হয়ে উঠছে ‘প্রেমের এক দ্বীপ’ হিসেবে।