কেনিয়ায় নারীদের যৌনদাসী বানাচ্ছে আল-শাবাব

প্রকাশ : ০১ জুন ২০১৭, ১৭:১১

জাগরণীয়া ডেস্ক

সোমালিয়ার আল-শাবাব জঙ্গীগোষ্ঠী কেবল যে কেনিয়ার পুরুষদেরই দলে টানছে তা নয়, সংগঠনটি যৌনদাসী হিসেবে কেনিয়ার মেয়েদেরও আটক ও পাচার করছে। ঘন জঙ্গলে ক্যাম্পে নিয়ে মেয়েদের ধর্ষণ করছে আল-শাবাবের জঙ্গীরা। ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়া নারীরা কোনো ধরনের সহায়তা ছাড়াই গভীর জঙ্গলে সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। আর জঙ্গলে সেই সন্তানেরা বেড়ে উঠছে।

কেনিয়ার সালামা আলী যখন গত বছর তার নিখোঁজ দুই ভাইকে খোঁজা শুরু করেন তখন তিনি প্রতিবেশী দেশ সোমালিয়ার আল-শাবাব জঙ্গীগোষ্ঠীর ভয়াবহ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে পারেন। সালামা আলী নিরাপত্তা বাহিনীর সন্দেহ এড়াতে গোপনে তার ভাইদের খোঁজ শুরু করেন।

মোম্বাসায় তিনি এমন সব নারীদের সঙ্গে দেখা করেন, যাদের পুরুষ আত্মীয়রা নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেন তিনি। তবে জোর করে যেসব নারীদের সোমালিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদের জীবনের ভয়াবহ কাহিনীর বিষয়েও জানতে পারেন তিনি।

মোম্বাসা ও কেনিয়ার অন্য উপকূলীয় অঞ্চল থেকে খ্রিস্টান ও মুসলিম সম্প্রদায়ের তরুণী ও বয়স্ক নারীদের জোর করে তুলে নেওয়া হয়। ওই নারীদের প্রথমে বিদেশে বা অন্য শহরে ভালো পারিশ্রমিকের কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এবং পরে তাদের অপহরণ করা হয়।

আল-শাবাবের বন্দীশিবির থেকে ফিরে আসা নারীদের সহায়তা দিতে গত বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি গোপন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন সালামা। এই সংগঠনের কথা জানতে পেরে নির্যাতিত নারীরা তার কাছে ছুটে আসেন এবং ওই সংগঠনে যোগদান করতে চান। কজন নারী আসেন বাচ্চাসহ, কজন ছিলেন এইডসে আক্রান্ত। ভয়ংকর অভিজ্ঞতার শিকার এই নারীদের কেউ আবার মানসিকভাবে অসুস্থ। তারা সবাই ভীত। আর ওই নারীদের মাধ্যমেই জানা যায় আল-শাবাবের বর্বরতার কথা।আল-শাবাবের হাতে বন্দী থাকা ২০ জনেরও বেশি নারীর সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। 

এসময় এক নারী জানান, ‘অনেক পুরুষ একের পর এক আসতো, আমাকে ধর্ষণ করতো। আমি তাদের সংখ্যাটা বলতে পারব না। তিন বছর প্রত্যেক পুরুষই আমার সঙ্গে শোবার জন্য এসেছে। প্রতি রাতে একজন নারীর কাছে দুই থেকে তিনজন পুরুষকে আনা হতো। আমরা বারবার ধর্ষণের শিকার হতাম’ বলেন নির্যাতনের শিকার আরেক নারী। 

সোমালিয়ায় ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে আল-শাবাব। তারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। আল-শাবাবের হামলার শিকার হওয়া প্রতিবেশী দেশগুলো আফ্রিকান ইউনিয়নের বাহিনীর অংশ হিসেবে সেনা পাঠিয়েছে। এ ছাড়া আল-শাবাবের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সোমালিয়ার সঙ্গে সীমান্ত এলাকার ঘন জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে আসছে কেনিয়ার সেনারা। 

সূত্র: বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত