‘যৌনতার বিনিময়ে’ নারীদের আশ্রয় দেয়ার বিজ্ঞাপন

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০১৬, ১৬:১৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

যুক্তরাজ্যকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অন্যতম হিসাবে মনে করা হয়। অথচ এ ধরনের দেশেও আশ্রয়হীনদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। রাস্তার পাশে তরুণী থেকে শুরু করে বৃদ্ধাদেরও প্ল্যাকাড হাতে বসে থাকতে দেখা যায়। সেই প্ল্যাকাডে সাহায্য চাওয়ার আকুতি জানানো হয়। আর এই দারিদ্রতাকে নিজেদের মনোরঞ্জনের কাজে লাগাতে চাইছে সমাজের বিত্তবানেরা। এই বিত্তবানরা অনলাইনে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। সেখানে আশ্রয়হীন সুন্দরী নারীদেরকে যৌন সম্পর্কের বিনিময়ে নিখরচায় আরাম আয়েশে থাকার লোভ দেখানো হয়। যুক্তরাজ্যের আশ্রয়হীনদের দাতব্য সংগঠন ‘শেল্টার’ নামে একটি সংগঠন সম্প্রতি মানবিক বিপর্যয়ের সবশেষ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

সংস্থাটি জানায়, ‘ক্র্যাগলিস্ট’ নামে একটি ওয়েব সাইটে এ রকম বহু বিজ্ঞাপন চোখে পড়বে। এখানে বিজ্ঞাপন দাতারা সেক্সের বিনিময়ে বিনা পয়সায় থাকার সুযোগ দেয়া হবে বলে আশ্রয়হীন নারীদের প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছেন।

ক্র্যাগলিস্টের একজন ব্যবহারকারী ওয়েব সাইটটিতে লিখেছেন, ‘যদি কোনো অল্প বয়সী নারী শিক্ষার্থী বিনা পয়সায় থাকা-খাওয়ার নিশ্চয়তা চান তাহলে নিজেকে ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত থাকেন; তাহলে নিজের বিস্তারিত বিবরণ এবং সাম্প্রতিক তোলা এক কপি ছবিসহ ই-মেইলে যোগাযোগ করুন। ছবি না দিলে যোগাযোগের দরকার নেই।’

দাতব্য সংস্থাটি জানায়, ব্যবহারকারীরা প্রায়ই সুন্দরী তরুণী চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। আর এটি নিশ্চিত হতে তারা ওই তরুণীর ছবি পাঠাতে বলেন। 

আরেক জন বিত্তবান একই ধরনের পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘এখানে যদি কোনো চমৎকার সুন্দরী আশ্রয়হীন নারী থেকে থাকেন; যিনি অর্থ সাশ্রয় করতে চান এবং থাকার জায়গা খুঁজছেন তাহলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তার জন্য রয়েছে আমার পক্ষ থেকে দারুণ প্রস্তাব। যেকোনো দেশের, যে কোনো সংস্কৃতির অল্প বয়সী, সুশ্রী তরুণী আমার সঙ্গে বিনা পয়সায় থাকতে পারেন’।

শেল্টারের এক মুখপাত্র জানান, কিছু ব্যক্তি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্দিষ্ট করে বলেছেন, যৌন সম্পর্কের বিনিময়ে তারা নারীদের নিখরচায় থাকা খাওয়ার সুযোগ দিবেন। এই ধরণের বিজ্ঞাপনের কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নারীর সমতা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রায়নার।

তিনি বলেন, ক্র্যাগলিস্টসহ আরও যেসব ওয়েব সাইটে এই ধরণের বিজ্ঞাপন দেয়া আছে তা অবিলম্বে সরিয়ে নেয়া উচিত। এই ধরণের বিজ্ঞাপন আধুনিক দাসত্বকে উৎসাহ দেয় এবং নারীদের যৌন দাসী হতে বাধ্য করে।’

যুক্তরাজ্যের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ব্রিটেনে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজারে বেশি মানুষ রাস্তায় রাতযাপন করে।

সূত্র: ডেকান ক্রনিক্যাল

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত