যৌন কেলেঙ্কারিতে পদত্যাগপত্র দিলেন চিলির ৩৪ বিশপ

প্রকাশ : ১৯ মে ২০১৮, ১৪:১৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

শিশুদের যৌন নিপীড়ন এবং তা ধামাচাপা দেয়ার কেলেঙ্কারির জেরে চিলির ৩৪ জন রোমান ক্যাথলিক বিশপের সবাই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কোনো দেশের উচ্চ পর্যায়ের খ্রিস্টান ধর্মগুরুরা এক সঙ্গে পদত্যাগ করতে চাওয়ার ঘটনা এই প্রথম।

শুধু তাই নয়, তারা ভুক্তভোগী ও চার্চের কাছে তাদের গুরুতর ভুল এবং সত্য গোপন করার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।

১৮ মে (শুক্রবার) টানা তিনদিনের আলোচনা শেষে ক্যাথলিক সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিশপ লুই ফারনান্দো রামোস পেরেজ এবং হুয়ান ইগনাসিও গোনজালেজ এরাজুরিজ। তবে পোপ ফ্রান্সিস বিশপদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন কিনা তা এখনো জানা যায়নি।

এই ঘটনার মূলে রয়েছেন ফাদার কারাদিমা। তিনি ছিলেন খুবই প্রভাবশালী একজন যাজক। ভ্যাটিকানের তদন্তে ১৯৭০ ও ৮০’র দশকে তার বিরুদ্ধে কমবয়সী ছেলেদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কিন্তু সেসময় তাকে শাস্তি না দিয়ে আজীবন ‘প্রায়শ্চিত্ত ও প্রার্থনা’র কথা বলা হয়। অনেক পুরনো ঘটনা হওয়ায় পরবর্তীতে ফাদার কারাদিমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এ ঘটনার চলমান তদন্তকে বন্ধ করে দেন তার শিষ্য বিশপ হুয়ান বারোস। নিজের পদমর্যাদাকে ব্যবহার করে তিনি তার গুরু ক্যাথলিক যাজক ফারনান্দো কারাদিমার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের তদন্তটি বন্ধ করে সমালোচনার মুখে পড়েন।

হুয়ান বারোসের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সম্পর্কে জানার পরও তাকে বিশপ হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন পোপ ফ্রান্সিস। কারণ হিসেবে বলেন, হুয়ান বারোস নিজে যৌন নিপীড়নে যুক্ত ছিলেন না। অভিযোগ ও সমালোচনার মুখে গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার পদত্যাগ করার চেষ্টা করেছেন বিশপ বারোস। কিন্তু প্রতিবারই তার পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। পোপের দৃষ্টিতে বিশপ বারোস ছিলেন নির্দোষ।

এমনকি এ বছরের জানুয়ারিতে চিলি সফরের সময় বিশপ বারোসের পক্ষে বক্তব্য দেন পোপ ফ্রান্সিস এবং সমালোচিত হন। এরপরই নিজের ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন পোপ। জানুয়ারির শেষদিকে তিনিই ভ্যাটিকানের যৌন নির্যাতন বিষয়ক সর্বোচ্চ বিশেষজ্ঞকে চিলি পাঠান বিষয়টি তদন্ত করার জন্য। তদন্তে উঠে আসে বিশপ বারোসের সম্পৃক্ততার বিষয়টি।

এবার বিশপ হুয়ান বারোস পদত্যাগ করতে চাইলে পোপ তা গ্রহণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত