সহকারী জজ হতে হলে যা করতে হবে

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০১৭, ০১:০৭

জাগরণীয়া ডেস্ক

সহকারী জজ পদে আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতক অথবা দ্বিতীয় শ্রেণির এলএলএম ডিগ্রি উত্তীর্ণ হতে হবে। আইন বিষয়ে স্নাতক অথবা স্নাতক (সম্মান) অথবা এলএলএম ডিগ্রি পরীক্ষায় অবতীর্ণ প্রার্থীরাও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত শর্ত সাপেক্ষে আবেদন করতে পারবেন। বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৩২ বছর। প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক অথবা বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

আবেদন প্রক্রিয়া
এ পদে আবেদনের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সোনালী ব্যাংকের শাখাগুলো থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে তা যথাযথভাবে পূরণ করে সচিব, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়, ১৫, কলেজ রোড, রমনা, ঢাকা ১০০০ ঠিকানায় নির্ধারিত তারিখের মধ্যে সরাসরি বা ডাকযোগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পৌঁছাতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত রঙিন ছবি এবং পরীক্ষার ফি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের অনুকূলে বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা এর দায়িত্ব পালনকারী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দিয়ে মূল কপি সংযুক্ত করতে হবে।

নির্বাচন পদ্ধতি
আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রার্থীদের প্রথমে ১০০ নম্বরের প্রাথমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এই পরীক্ষায় সাধারণ বাংলা, সাধারণ ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়সমূহ, সাধারণ গণিত, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা ও আইন বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হবে।

আগে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে ৫৫ নম্বর লাগলেও নতু্ন নিয়োগে ন্যূনতম ৫০ নম্বর পেতে হবে। এবার নতুন নিয়মে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে, তাই পাস নম্বর কমানো হয়েছে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের এরপর ১০০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

এর মধ্যে বাংলা বিষয়ে ১০০ নম্বর, ইংরেজিতে ১০০, গণিতে ৫০, দৈনন্দিন বিজ্ঞানে ৫০, বাংলাদেশ বিষয়গুলোতে ৫০ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। আর বাকি ৬০০ নম্বরে আইন-সংক্রান্ত বিষয়ে পরীক্ষা হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে গড়ে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর থাকবে ৫০। 

পরীক্ষা প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষায় আইন অংশে ভালো করতে হলে পড়তে হবে প্রার্থীর সম্মান শ্রেণির আইন-সম্পর্কিত বইগুলো। বাংলা অংশের জন্য নবম থেকে দশম শ্রেণির ব্যাকরণের অধ্যায়গুলো পড়লে প্রশ্ন পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বিভিন্ন লেখকের নাম, উক্তি, জন্ম-মৃত্যু সালগুলো জানা থাকলে বাংলা অংশে ভালো করা যাবে। আর গণিতে ভালো করতে হলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বইগুলো বারবার চর্চা করলে প্রশ্ন পাওয়া যাবে। ইংরেজির জন্য গ্রামারগুলো পড়তে হবে মনোযোগসহকারে। এই গ্রামার অংশ থেকেই বেশি প্রশ্ন থাকে। বাংলাদেশ-আন্তর্জাতিক বিষয় ও দৈনন্দিনবিজ্ঞানের জন্য বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, জলবায়ু, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, বিভিন্ন জেলার আয়তন, অর্থনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। আর আন্তর্জাতিক অংশের জন্য বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, সাম্প্রতিক ঘটনা থেকে প্রশ্ন পাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া বাজারে সাধারণ জ্ঞানের বিভিন্ন প্রকাশনীর বই ও দৈনিক পত্রিকাগুলো পড়লেও কাজে দেবে। আর বারবার চর্চা করতে হবে বিগত বছরের সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো।

মৌখিক পরীক্ষা
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। সেই সঙ্গে আইন বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, ইতিহাস, প্রার্থীর নিজ জেলা বা উপজেলার আয়তন, সংস্কৃতি, রাজনীতি, জনসংখ্যা, সাংসদের নাম ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা থাকলে মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করা যাবে।

সুযোগ-সুবিধা ও পদোন্নতি
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত একজন সহকারী জজ জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ অনুযায়ী ১৬০০০ টাকা স্কেলে বেতন পাবেন। জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে একজন সহকারী জজ পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হতে পারেন।

নিয়োগ-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য ভিজিট করতে পারেন www.jscbd.org.bd এই ঠিকানায়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত