ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো আন্তর্জাতিক ডাটা সেন্টার সামিট

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:৩০

জাগরণীয়া ডেস্ক

বাংলাদেশে বর্তমানে বেসরকারিখাতে ‘বৈশ্বিক মানে’র কোন ডাটা সেন্টার না থাকলেও ২০১৯ নাগাত ১০ টি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান মান অর্জন করবে বলে আশা প্রকাশ করছেন আন্তর্জাতিক ডাটা সেন্টার মান প্রতিষ্ঠানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।

আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আপটাইম ইনিস্টিটিউটের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জন ডাফিন বলেন, জাতীয় ডাটা সেন্টারের পাশাপাশি বেসরকারিখাতের বেশ কটি প্রতিষ্ঠান বৈশ্বিক মানসনদের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। এ বছরের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রক্রিয়া শেষ হবে। এবং আগামী বছর নাগাত দশটি প্রতিষ্ঠানকে ‘মান স্বীকৃতি’ দিতে আশা প্রকাশ করছি আমরা।

১৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাজধানীর আগারগাওস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক ডাটা সেন্টার সম্মেলনে একটি সেমিনারে বাংলাদেশে ডাটা সেন্টার প্রযুক্তির সম্ভাবনা উল্লেখ করে ডাফিন বলেন, ডাটা সেন্টার ব্যবস্থাপনায় সবচে গুরুত্বপূর্ণ হলো– নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এবং তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এ অঞ্চলে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্ভব না হলেও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে ডাটা সেন্টারে সবুজ প্রযুক্তির পরিচয় করানো গেলে বেসরকারি খাতে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়বে। ফলে ব্যবসায়িক অগ্রগতিও প্রভাবিত হবে।

১৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর আগারগাওস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) পর্দা নেমেছে ডাটা সেন্টার প্রযুক্তি সম্পর্কিত এই সম্মেলনের।

বাংলাদেশী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডিসি আইকন ও ডাটা সেন্টার প্রফেশনাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে দ্বিতীয়বারের মত আয়োজিত সম্মেলনে যোগ দিয়েছে নয় দেশের তথ্য ব্যবস্থাপনা খাতের বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদ।

দুদিনের সম্মেলনের উদ্বোধনীপর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইমরান আহমেদ এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান শাজাহান মাহমুদ।

সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদ বলেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশনের অন্যতম উদ্যোগ - ফোর টায়ার ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার। আমাদের দেশের প্রযুক্তি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষ মানব সম্পদ পর্যাপ্ত নয়। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের সাথে ডাটা সেন্টার বিষয়টি অন্তুর্ভুক্তি করে দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়নে নজর দেয়া দরকার।

তথ্য ব্যবস্থাপনায় নীতিমালার বিষয়ে ইমরান আহমেদ বলেন, সংসদে আইন পাশ করে তথ্য নিরাপত্তা দেয়ার আগে আমাদের দেশের প্রকৌশলী ও শিক্ষাবিদদের ডাটা সেন্টার নিয়ে দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। না হলে, তথ্য নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রবাব পরলে তা সমাধানে আমাদের বিদেশ নির্ভরতা বাড়বে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাজাহান মাহমুদ বলেন, দেশে প্রযুক্তি ভিত্তিক কার্যক্রম বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে তথ্যের পরিমান। দেশে বর্তমানে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রযুক্তির ব্যবহার জনপ্রিয়। এতো বড় জনগোষ্ঠীর প্রযুক্তি তথ্য ব্যবস্থাপনায় ডাটা সেন্টার প্রযুক্তি সম্ভাবনাময়। এই খাতে অভ্যান্তরীন দক্ষতা উন্নয়নে আমাদের মনযোগী হতে হবে।

আয়োজক প্রতিষ্ঠান ডিসি আইকনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ বলেন, আমাদের দেশের ২০১০ সাল থেকেই বাণিজ্যিক কার্যক্রমে ডাটা সেন্টার প্রযুক্তির প্রচলন শুরু হয়েছে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও ডাটা সেন্টার প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি বাড়ছে। দ্বিতীয় বারের মত আয়োজিত এই সম্মেলনে আমরা প্রযুক্তি ভিত্তিক তথ্য জমাকরণের উপরে দেশীয় প্রযুক্তিবিদদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোর দিচ্ছি।

উদ্বোধনী পর্বে আরো বক্তব্য রাখেন অ্যাশরে বাংলাদেশ অংশের সভাপতি মানস কুমার মিত্র, আন্তর্জাতিক ডাটা সেন্টার মান প্রতিষ্ঠান আপটাইমের দক্ষিন এশিয়া অঞ্চলের প্রধান জন ডাফিন, ডাটা সেন্টার সেবা প্রতিষ্ঠান কোলো এশিয়া পরিচালক মেহরীন নাসির, শার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান জোসেফ বি ইউসিলিস প্রমুখ।

আয়োজকরা জানান, দুদিন ব্যাপী সম্মেলনে নয় দেশের ৩০টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রদর্শনীর পাশাপাশি ডাটা সেন্টার প্রযুক্তি বিষয় সংশ্লিষ্ট ৫০টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত