আরেকটু মানবিক সহানুভুতির সাথে দেখা যায় না কি?

প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০১৬, ১৪:২২

সঙ্গীতা ইমাম

আমি একজন সাধারণ মা। আইনের অতশত আমি বুঝি না। আমি খবরের কাগজে পড়েছি পুলিশের বয়ান, একটি মেয়ে, যে কিনা ছিল মাদকাসক্ত, সে তা বাবা এবং মাকে হত্যা করেছে। যে বাবা ছিলেন পুলিশের কর্মকর্তা। যার ছিল অপরাধী ধরার প্রশিক্ষণ এবং সার্ভিস রিভলবার। তাহলে,সেই বাবা মাকে মারা এত ই সহজ কাজ একটা ১৫/১৬ বছরের মেয়ের পক্ষে! আর ঐশিরা যে মাদকে আসক্ত হয় তার দায় কি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রের নাই? নিশ্চয়ই আমি, আপনি, ঐশির বাবা মা, আশে পাশের সকলকেই এবং রাষ্ট্রকেও এর দায় বহন করতে হবে। মেয়ের হাতে এত টাকা দেয়া, সময় না দেয়া, সংশোধনাগারে না দেয়া ইত্যাদি গাফিলতি তো ছিলই। শিশুর লালন পালনে বাবা মা, বিদ্যালয়, শিক্ষক, আত্মীয়, প্রতিবেশী সকলেরই দায়িত্ব থাকে। আমরা কেউ সে দায় এড়াতে পারি না।

আর পুলিশ বাবারও কোন শত্রু থাকতে পারে যে ঐশিকে দিয়ে একাজ করাতে বা অন্য কেউ করেছে আর দায় চাপাচ্ছে ঐশির উপর। কোন মাদকচক্র হয়তো অস্ত্র ধরে এ জঘন্য কাজটি করিয়ে নিয়েছে ওকে দিয়ে। কিংবা নিতান্ত নেশার বশবর্তী হয়ে করেছে এ অপরাধ! প্রতিটি ক্ষেত্রে আরো বিবেচনা প্রয়োজন। অন্য কারো দায় এক নাবালকের ওপর চপিয়ে দেয়ার মত নৃশংস কাজ আমরা, সমাজ কিংবা আদালত করতে পারেন না। কিংবা মাদকাসক্তির ব্যাপারটি বিবেচনায় এনে সংশোধনকেন্দ্রে পাঠানো যেতে পারে।

৪৫ বছর আগের অপরাধী যারা গণহত্যা করেছে তারা নির্বিঘ্নে ঘুরছে, তবে ঐশির বেলায় এত তড়িঘড়ি কেন?

একটি শিশু অপরাধী কেন সংশোধনের সুযোগ পাবে না!

একজন মা হিসেবে বলতে চাই, আমি নিশ্চিত আজ ঐশির মা মতামত জানাতে পারলে তিনিও সন্তানের প্রাণভিক্ষা চাইতেন। আমরা গল্প শুনেছি, এক পুত্র মায়ের কলিজা কেটে নিয়ে যাবার সময় হোঁচট খেলে, মায়ের কলিজা জানতে চায় বাবা ব্যথা পাসনি তো! তাই সকলের কাছে আবেদন আরেকটু মানবিক সহানুভুতির সাথে দেখা যায় না কি, ঘটনাটি!

আমি আমার এই অদেখা কন্যার পক্ষে ক্ষমা চাই। তার প্রাণভিক্ষা চাই। তাকে সংশোধনের সুযোগ দানের আবেদন জানাই।

সঙ্গীতা ইমাম এর ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত