মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০১:০৭

নীলাদ্রি বিশ্বাস

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনার এই মিষ্টি হাসি দেখে মনে হয় না আপনি অন্য কেউ, আপনার মিষ্টি হাসি দেখে মনে হয় আপনি আমার পরিবারেরই একজন। তাই আপনাকে বুবু বলে সম্বোধন করি। অনেক কথা আপনাকে বলার ছিল, কিন্তু আপনার সাথে দেখা করা বা সরাসরি কথা বলার আমার জন্য কোন মাধ্যম নেই যেটা দিয়ে আপনার সাথে কথা বলতে পারব। তাই কিছু কথা এখানেই লিখে দিলাম।

এই যে একের পর এক দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে, তার কোনো সুষ্ঠু বিচার আপনি আজ অবধি করেননি, কেন করেননি?
আপনার বাবা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সেই কথা আপনি ভুলে গেলেও আমরা ভুলিনি।

১৯৭২ সালের ৭ জুন, রেসকোর্স ময়দানে ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, "বাংলাদেশ হবে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ধর্ম নিরপেক্ষ মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমান মুসলমানের ধর্ম পালন করবে। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে। খ্রিস্টান তার ধর্ম পালন করবে। বৌদ্ধও তার নিজের ধর্ম পালন করবে। এ মাটিতে ধর্মহীনতা নাই, ধর্ম নিরপেক্ষতা আছে। এর একটা মানে আছে। এখানে ধর্মের নামে ব্যবসা চলবে না। ধর্মের নামে মানুষকে লুট করে খাওয়া চলবে না। ধর্মের নামে রাজনীতি করে রাজাকার, আল বদর পয়দা করা বাংলার বুকে আর চলবে না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না"।

এই যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কত সুন্দর করে নিরপেক্ষতার কথা বলে গেছেন, আপনি কি করে তার উল্টোটা করলেন বা কিভাবে তা হতে দিলেন?

১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদে (জাতীয় সংসদে) ভাষণ দেওয়ার সময় আরো বলেন, "আমাদের আদর্শ পরিষ্কার। এই পরিষ্কার আদর্শের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই আদর্শের ভিত্তিতে এই দেশ চলছে। জাতীয়তাবাদ-বাঙালী জাতীয়তাবাদ, এই বাঙালি জাতীয়তাবাদ চলবে বাংলাদেশে। বাংলার কৃষ্টি, বাংলার ঐতিহ্য, বাংলার আকাশ-বাতাস, বাঙালির রক্ত দিয়ে গড়া বাংলার জাতীয়তাবাদ। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, জনসাধারণের ভোটের অধিকারকে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি সমাজতন্ত্রে, যেখানে শোষনহীন সমাজ থাকবে। শোষক শ্রেণী আর কোনোদিন মানুষকে শোষণ করতে পারবে না। সমাজতন্ত্র না হলে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ ৫৪ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে বাঁচতে পারবে না। সেজন্যই অর্থনীতি হবে সমাজতান্ত্রিক, আর হবে ধর্ম নিরপেক্ষতা। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে, মুসলমান তার ধর্ম পালন করবে না, বাংলার মানুষ এটা চায় না। রাজনৈতিক কারণে ধর্মকে ব্যবহার করা যাবে না। রাজনৈতিক কারণে ধর্মকে ব্যবহার করা যাবে না। যদি কেউ ব্যবহার করে, তাহলে বাংলার মানুষ তাকে প্রত্যাঘাত করবে। এ বিশ্বাস আমি করি"।

১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি আরো বলেন, "জনাব স্পিকার সাহেব, ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মকর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবও না। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রের কারো নেই। হিন্দু তাদের ধর্ম পালন করবে, কারো বাধা দেওয়া ক্ষমতা নেই। বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের কেউ বাধাদান করতে পারবে না। খ্রীস্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, কেউ তাদের বাধা দিতে পারবে না। আমাদের শুধু আপত্তি হলো এই যে, ধর্মকে কেউ রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না"।

২৫ বছর আমরা দেখেছি ধর্মের নামে জুচ্চোরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেঈমানি, ধর্মের নামে অত্যাচার, ধর্মের নামে খুন, ধর্মের নামে ব্যাভিচার- এই বাংলাদেশের মাটিতে এসব চলেছে।

ধর্ম অত্যন্ত পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। যদি কেউ বলে ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়েছে, আমি বলবো, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়নি, সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষার ব্যবস্থা করছি। 

"যদি কেউ বলে গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার নাই, আমি বলবো সাড়ে সাতকোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যদি গুটি কয়েক লোকের অধিকার হরণ করতে হয়, তাহলে তা করতে হবে।"

এই যে বঙ্গবন্ধু বলেছেন, "যদি কেউ বলে গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার নাই, আমি বলবো সাড়ে সাতকোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যদি গুটি কয়েক লোকের অধিকার হরণ করতে হয়, তাহলে তা করতে হবে।"

তাহলে কি আপনি মনে করছেন স্বাধীন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার নেই? বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা কি (তখনকার সময়ে) সাড়ে সাতকোটি মানুষের বাহিরে ছিল, না তাদের বাহিরে রেখে বলা হয়েছিল যে "সাড়ে সাতকোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যদি গুটি কয়েক লোকের অধিকার হরণ করতে হয়, তাহলে তা করতে হবে।"

তাহলে কি সংখ্যালঘুরা আজ গুটি কয়েকের দলে, তাই তাদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করার কোনো ভাবনা আপনার নেই? মৌলিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার, নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তাও আপনি নির্বাক।

১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু বলেন, "আর একটা জিনিস। রাজনীতিতে যারা সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি করে , যারা সাম্প্রদায়িক, তারা হীন, নীচ, তাদের অন্তর ছোট। যে মানুষকে ভালোবাসে, সে কোনোদিন সাম্প্রদায়িক হতে পারে না। আপনারা যারা এখানে মুসলমান আছেন তারা জানেন যে, খোদা যিনি আছেন, তিনি রাব্বুল আলামিন, রাব্বুল মুসলেমিন নন। হিন্দু হোক, খৃষ্টান হোক, মুসলমান হোক, বৌদ্ধ হোক, সমস্ত মানুষ তার কাছে সমান। সেজন্যই এক মুখে সোস্যালিজম ও প্রগতির কথা আরেকমুখে সাম্প্রদায়িকতা চলতে পারে না। সমাজতন্ত্র, প্রগতি আর সাম্প্রদায়িকতা পাশাপাশি চলতে পারে না"।

বাংলাদেশের সংবিধানে কি আছে আমরা একটু দেখে নেই। আপনিও দেখে নেন।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান

১[ বিস্‌মিল্লাহির-রহ্‌মানির রহিম
(দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে)
পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে।]
প্রস্তাবনা
আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া ২[ জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের] মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি;

৩[ আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল -জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে ;]

আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে;
আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তায় সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রগতিশীল আশা-আকাঙ্খার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেইজন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য;
এতদ্বারা আমাদের এই গণপরিষদে, অদ্য তের শত ঊনআশী বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের আঠারো তারিখ, মোতাবেক ঊনিশ শত বাহাত্তর খ্রীষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের চার তারিখে, আমরা এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করিয়া সমবেতভাবে গ্রহণ করিলাম।

এবার বলব বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা।

২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালের প্রথম তিন মাসে প্রায় তিনগুণ সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে৷ জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ – এই তিন মাসে ৮২৫০টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে৷ এর মধ্যে হত্যা, অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তর করা, গণধর্ষণ, জমিজমা ঘরবাড়ি মন্দির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও উচ্ছেদের ঘটনাও রয়েছে৷ ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ২৬১টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে৷ তাতে ১৫৬২টি প্রতিষ্ঠান, পরিবার ও ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ কিন্তু ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত প্রথম তিন মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর কমপক্ষে ৭৩২টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের ঘটনার প্রায় তিনগুণ৷ এতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯৫৬৬টি, যা আগের এক বছরের তুলনায় ছয়গুণেরও বেশি৷ এ সময়ে ১০ জন নিহত, ৩৬৬ জন আহত এবং ১০ জন হিন্দু অপহৃত হন। জোরপূর্বক ধর্মান্তরের অভিযোগ রয়েছে ২টি৷ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮ জন৷ জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, দখল ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ৬৫৫টি৷ এছাড়া ঐ সময়ে কমপক্ষে ২২টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকি দেয়া হয়৷

২০০১ সালের নির্বাচনের পর বরিশাল, বাগেরহাট, পাবনা ও নড়াইলসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে৷ এরপর থেকে একযোগে বিভিন্ন সংখ্যালঘু নির্যাতন কমে এলেও তা থামেনি৷ এরপর ২০১২ সালের অক্টোবরে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর বড় ধরণের হামলা হয়৷ আর সর্বশেষ ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসির নগরে হিন্দুদের শতাধিক বাড়ি-ঘরে হামলা-ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়৷ সেদিন অন্তত ১০টি মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়৷ হিন্দু পল্লিতে নারী-পুরুষকে বেধড়ক পেটানো হয়৷

রামুতে বৌদ্ধমন্দিরে যেভাবে ফেসবুক পোস্টের অজুহাত তুলে হামলা চালানো হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও একইভাবে হামলা হয়৷ ওই এলাকা থেকে দু'জন মন্ত্রী আছেন সরকারে৷ তারা চুপ৷ তাদের একজন ঘটনা আড়াল করার জন্য নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছেন৷ সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চাইলে তাদের ‘মালাউনের বাচ্চা' বলে গালি দেয়া হচ্ছে৷

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের সংখ্যা দিনকে দিন কমছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০০১ ও ২০১১ সালের তথ্য তুলনা করলে দেখা যায় ১৫টি জেলায় হিন্দু জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে৷ ১০ বছরে মোট ৯ লাখ হিন্দু কমেছে৷ বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ ও পাবনা জেলায় এই সময়ে যে হিন্দুদের সংখ্যা কমেছে তা জরিপে স্পষ্ট৷

বিবিএস এর তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সালে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯ দশমিক ২ ভাগ ছিল হিন্দু৷ ২০১১ সালে তা হয় ৮ দশমিক ৫ শাতাংশ৷ আর স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে মোট জনসংখ্যার ১৩ দশমিক ৫ ভাগ ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী৷

২০১৩ সালে পাবনার সাথিয়া উপজেলার বনগ্রাম বাজারে ধর্মীয় অবমাননার ভুয়া অভিযোগে অর্ধশত হিন্দু বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বনগ্রাম বাজারে স্থানীয় ব্যবসায়ী বাবলু সাহার ছেলে রাজীব সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ফেসবুকে ইসলামের কটুক্তি করে পোস্ট দেয়ার। বনগ্রাম হাটের দিনে শত শত লিফলেট বিলিয়ে সাধারণ জনগণকে উত্তেজিত করা হয়। কিন্তু পরে পুলিশের তদন্তে দেখা যায় রাজীব এরকম কোনো পোস্ট দেয়নি।

অথচ ধর্মীয় অবমাননায় উসকানি পেয়ে সেদিন হাজার হাজার লোকজন সাহাপাড়ায় হামলা করে। এলাকার প্রায় ৩০-৩৫টি হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর এবং বাজারে কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরসহ বাবলু সাহার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালায়। বাড়ীতে ভাঙচুর করে পারিবারিক মন্দিরে আগুন দেয় আর প্রতিমা ভাঙচুর করে।

ঘটনা ১

২২ ডিসেম্বর-২০১৪। নান্দাইল, ময়মনসিংহে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ
উপজেলার সিংপাড়া গ্রামের রবীন্দ্র সিংয়ের কলেজ পড়ুয়া ছেলে একই গ্রামের মুসলিম স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গেলে এ নিয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে সালিশ বসে। গত ২২ ডিসেম্বর এক সালিশীতে হিন্দু পরিবারটিকে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন গ্রাম্য মাতবররা। অভিযুক্ত চঞ্চল সিং এলাকা ছাড়া কিন্তু মেয়েটি তার বাবা-মায়ের কাছে আছে। আহতের সংখ্যা ২।
-দৈনিক সমকাল, ১ জানুয়ারি, ১৫

ঘটনা ২
২৩ ডিসেম্বর-১৪। কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট হিন্দু রিক্সাচালককে গ্রেফতার ১
উপজেলার শ্রীখাতা গ্রামের রিক্সাচালক নারায়ণচন্দ্র রায়কে ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর তার হাতে ২ কেজি গাঁজা দিয়ে তাকে মাদকদ্রব্য মামলায় আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। তাঁর পরিবার-পরিজন এখন অভুক্ত থাকছে। এলাকাবাসী এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে।
-দৈনিক সংবাদ, ১ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৩
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম বসতঘর ভাংচুর, লুটপাট
পাঠানদন্ডী এলাকায় গত বুধবার রাত ১০টায় ১০/১৫ জন বখাটেরা অমূল্য দাসের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে মাতলামি করছিলো। এতে বাধা দেয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অমূল্য দাসের বসত ঘর ভাংচুর করেও বিষ্ণু মন্দিরের আসবাব তছনছ করে। আহতের সংখ্যা ৭
-দৈনিক ইত্তেফাক, ২ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৪
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ কালিয়কৈর, গাজীপুর মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর
উপজেলার সোনাতলা এলাকায় বুধবার গভীর রাতে কালীমন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
-দৈনিক সংবাদ, ৩ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৫
২ জানুয়ারি,২০১৫। স্থান- কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ, মন্দিরে বোমা বিস্ফোরণ
পূর্বপাড়া সার্বজনীন কালীমন্দিরে গত শুক্রবার রাতে পূজাচলাকালীন সময়ে বিকট শব্দে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। মানুষ চারদিকে ছোটাছুটি করতে থাকে। পন্ড হয়ে যায় পূজার্চনা। গ্রামের লোকজন খবর পেয়ে আসতে তাকে। তারা বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মন্দিরের পাশে দাড়িয়ে থাকা ৩ যুবককে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে। আহত হয় ৩ জন।
-আমাদের সময়, ৪ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৬
৪ জানুয়ারি -২০১৫, কলমাকান্দা, নেত্রকোনা, মন্দিরে আগুন, প্রতিমা ভাঙচুর
উপজেলার নাউরীপাড়া গ্রামে গত বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তরা নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাসের বাড়ির কালি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও নৃপেন্দ্র মৈত্রের বাড়িতে লক্ষী-নারায়ন মন্দিরে াগ্নি সংযোগ করে পালিয়ে যায়।
-দৈনিক সংবাদ, ১১ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৭
১০ জানুয়ারি, ২০১৫ চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের হিন্দু শিক্ষিকা খুন
চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের শিক্ষিকা অঞ্জলী রানী দেবী নগরীর পাঁচলাইশের বাসা থেকে কলেজে যওয়ার পথে চকবাজার রেতপট্টি লেনের কাছে কতয়েকজন দুর্বত্ত তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আহত করে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। গুরুতর অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি মারা যান। নিহতের স্বামী ডা. রাজেন্দ্র চৌধুরী জানান, এলাকায় তাদের সঙ্গে কারো বিরোধ ছিলো না। অনুসন্ধানে জানা যায় কলেজে হিজাবের জের ধরে খুন হোন অঞ্জলী দেবী।
-আমাদের সময়/ভোরের কাগজ/জনকণ্ঠ-১১ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৮
১০ জানুয়ারি, ২০১৫ উখিয়া, কক্সবাজারে ৫২ পরিবারকে উচ্ছেদ
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে সংখ্যালঘু বড়–য়াদের অর্ধশতাধিক পরিবারের নারী, পুরুষ শিশুসহ আড়াই শতাধিক লোক সর্বস্ব হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছেন।পতিত জমি থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। উপায় না দেখে তারা দেশত্যাগের চেষ্টা করছে।গত রোববার সকালে দলবদ্ধভাবে তারা মায়ানমার যাওয়ার পথে বেতবুনিয়াতে বিজিবি তদাদের আটকে রাখে। সেখানে তারা অনশন করছে তাদের বসতভিটা ফিরে পেতে।
-দৈনিক সমকাল/জনকণ্ঠ, ১২ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৯
১০ জানুয়ারি, ২০১৫ নেত্রকোনায় দুটি মন্দিরে চুরি
জেলা শহরের জয়নগর কালীবাড়ীতে লোকনাথ আশ্রমে দুটি মন্দিরে শনিবার রাতে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয়েছে। চোরের দল মন্দিরের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দান বাসের টাকা ও পুজার সামগ্রী নিয়ে যায়।
-দৈনিক সমকাল, ১২ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১০
৬ জানুয়ারি, ২০১৫ ভুঞাপুর, টাঙ্গাইল হিন্দু পল্লিতে আগুন
গত মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ৮টায় পদন শীলের বাড়ির খড়ের গাদায় দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী শীল বাড়ির লোকজনের চিৎকার শুনে ছুটে আসে ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
-দৈনিক সংবাদ, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১১
১০ জানুয়ারি, ১৫ পাংশা, রাজবাড়ী-আদিবাসী মা ও মেয়ে ধর্ষণের শিকার
উপজেলার সরিষা ইউনিয়নে আদিবাসী এক বিধবা নারী ও তার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এঘটনায় সাফি শেখকে প্রধান করে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা তুলে নিতে আদিবাসী পরিবারটিকে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
-দৈনিক প্রথম আলো, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১২
১৩ জানুয়ারি, ১৫ ফরিদপুর ৮০টি প্রতিমা ভাংচুর
পালপাড়ার সুকুমার চন্দ্র পাল ও প্রদীপ চন্দ্র পাল আগামী ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বহুদিন বসে প্রতিমা তৈরী করেছিলো। সোমবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা ৭০টি প্রতিমা ভেঙে তাদের পথে বসিয়েছে।
-দৈনিক সংবাদ, আমাদের সময়, ১৪ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৩
১৫ জানুয়ারি, ১৫ কাউখালী, রাঙামাটি আদিবাসী শিশু ধর্ষণ
উপজেলার কাশখালীতে গত বুধবার ২য় শ্রেণীতে পড়–য়া এক আদিবাসী শিশু বাড়ির পাশের দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনে বাড়ি ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযেগে পুলিশ আয়ুব আলী নামে একজনকে আটক করেছে। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 
-দৈনিক সমকাল, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৪
১৫ জানুয়ারি, ১৫ বুড়িচং, কুমিল্লা ১৫ কোটি টাকার সম্পত্তি দখল
রামপাল গ্রামের নেপা চন্দ্র দেবনাথসহ তাদের পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে বিভিন্ন দাগে ৫ একর সম্পত্তি জবরদখল করে নিয়েছে এলাকার প্রভাবশালী হাবিবুর রহমান, আবুল কালামও হারুনর রশীদ। এ ব্যাপারে, বিক্ষোভ, সমাবেশ, মানব বন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করেও কোনো ফল হচ্ছে না।
-দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৫
১৫ জানুয়ারি, ১৫ কেশবপুর, যশোর এক পরিবারকে উচ্ছেদ
উপজেলার গুদামের কাছে স্বাধীনতার আগে থেকে ২৫/৩০ টি মন্ডল পরিবার বাস করে আসছে। এলাকার প্রভাবশালীদের অতাচারে বর্তমানে ৬/৭ ঘর টিকে আছে। এর মধ্যে খোকন মন্ডলের জমির উপর দৃষ্টি পড়েছে সবরোন্নেছা বেগম ১৫/২০ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে গত বৃহস্পতিবার বসত বাড়ি রান্নাঘর ভাংচুর করে দখল করে নেয় ওই বাড়ি। খোলা আকাশের নীচে খোকন মন্ডল। এখন সে যাবে কোথায়?
-দৈনিক সংবাদ, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৬
১৮ জানুয়ারি, ১৫ পিরোজপুর, বাড়ি ভেঙ্গে রাস্তা
সূর্য ওঠার আগেই শহরের ঝাটকাঠী এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অতুল চন্দ্র মজুমদারের ঘর ভেঙে রাস্তা বানিয়েছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী খোকন ও তাঁর ২৫/৩০ জনের বাহিনী। সন্ত্রাসীরা তাঁর ঘরের কাঠ দিয়ে খালের ওপর একটি ব্রিজও নির্মাণ করে চলে যায়।
-দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৭
১৮ জানুয়ারি, ১৫ দুমকি, পটুয়াখালী হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ
স্থানীয় প্রভাবশালী ছত্তার হাওলাদার গোপন কবলা দলিল বলে মিন্টু বিশ্বাসের শেষ আশ্রয়স্থলটুকুও আত্মস্বাৎ করেছে। মিন্টু বিকশ্বাসকে বিদেশে পাঠানোর নামে ৩ বছরের চুক্তি করলেও মিন্টুকে বিদেশে না পাঠিয়ে চুক্তিপত্রের বলে জবর দখল করেছে সব সম্পত্তি। এখন চলাফেরার রাস্তটিও বন্ধ করে দিয়েছে।
-দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৮
১৯ জানুয়ারি, ১৫ শার্শা, যশোর ৩১ পরিবার দেশ ছাড়া
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়মীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের নির্যাতনের ভাষা নেই। সম্প্রতি তার অত্যারে পালিয়ে দেশতাগ করেছে ৩১ পরিবার ৫০ পরিবার দেশ ত্যাগের পথে।
-দৈনিক সংবাদ/আমাদের সময়, ২০ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৯
১৮ জানুয়ারি, ১৫ পিরোজপুর গোবিন্দ মন্দিরের বিগ্রহ চুরি
রায়েরকাঠি জমিদার বাড়িতে ইসকন পরিচালিত রাধা-গোবিন্দ মন্দিরের তালা ভেঙ্গে পিতলের তৈরী মূল্যবান রাধাগোবিন্দের ৩টি মূর্তিসহ পূজার জিনিসপত্র সব নিয়ে গেছে চোরেরা। এ ব্যাপারে একটি জিডি দায়ের করা হয়েছে।
-দৈনিক সংবাদ, ২১ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২০
২১ জানুয়ারি, ১৫ গফরগাঁও, ময়মনসিংহ হিন্দু বাড়িতে আগুন বেলাব গ্রামে বুধবার ভোরে শ্রীকান্ত চন্দ্র দাস (৮০) নামে এক সংখ্যালঘুর বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে এলাকাবাসী এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
-দৈনিক জনকণ্ঠ, ২২ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২১
২৫ জানুয়ারি, ১৫ মানিকগঞ্জ পন্ড হলো সরস্বতী পূজার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রধান শিক্ষকের মোবাইল নম্বর না পেয়ে এক শিক্ষককে পেটালো ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক রুবেল। এঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পন্ড হয়ে যায় সরস্বতী পুজার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আহত শিক্ষককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
-দৈনিক সমকাল/সংবাদ/ইনকিলাব, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২২
২৫ জানুয়ারি, ১৫ পটিয়া, চট্টগ্রাম হিন্দু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা পূর্ব শত্রুতার জের হিসাবে সদরের বৈলতলী রোডের অনুকুল স্টোরে সকাল সাড়ে ৮ টায় শফিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তি হামলা চালায়। ওসময় হামলাকারী পেট্রোল দিয়ে অফিস জ্বালিয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়।
-দৈনিক জনকণ্ঠ, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২৩
২৫ জানুয়ারি, ১৫ মিরসরাই, চট্টগ্রাম বাড়িতে অগ্নিসংযোগ
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সংখ্যালঘু পরিবার প্রধান ধ্রুব বণিক জানায় দুর্বৃত্তরা তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত করে।
-দৈনিক ইত্তেফাক, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২৪
২৬ জানুয়ারি, ১৫ মাদারীপুর, সরস্বতী মন্দির, প্রতিমা ভাংচুর
সদরের উত্তর বীরাঙ্গনেরাতে সরস্বতী মন্দিরের অস্থায়ী স্থাপনা ও প্রতিমা ভেঙ্গে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
-দৈনিক জনকণ্ঠ, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২৫
২৬ জানুয়ারি, ১৫ মিরসরাই, চট্টগ্রাম জেলে সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুর
মিরসরাইয়ের জেলে সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর এবং ১৫ নারী-পুরুষ আহত হয়। মাদক সেবনের বাধা দিলে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালায়।
-ভোরের কাগজ, ২৯, জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২৬
২৯, জানুয়ারি, ১৫ খাগড়াছড়ি আদিবাসী নারী ধর্ষণ
খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়ায় পাহাড়ী এক নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
-৩১, জানুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২৭
২৯, জানুয়ারি, ১৫ নাজিরপুর উপজেলা, পিরোজপুর মন্দিরে আগুন
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কুমারখালী গ্রামে চিন্ময় মজুমদারের বাড়িতে ৫০/৬০জনের একদল দুর্বৃত্ত গোয়ালঘর বসত বাড়িতে লুটপাট এবং দুটি মন্দির পুড়িয়ে দিয়েছে।
-সংবাদ ৩১ জানুয়ারি, ২০১৫

ফেব্রুয়ারি ২০১৫ মাসে ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর সংগঠিত মানবাধিকার লংঘনের ঘটনার প্রতিবেদন

ঘটনা ১
৩১ জানুয়ারি, ২০১৫
হাটহাজারী, চট্টগ্রাম হিন্দুদের জায়গা দখলের হুমকি
উপজেলার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাধন চন্দ্র নাথের সম্পত্তি দখলের জন্য এলাকার প্রভাবশালী মহিউদ্দিন, মো. জসীম ও ইফনুস মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি, অমানবিক নির্যাতন ও বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে ঐ সংখ্যালঘু পরিবারটিকে যাতে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।
-দৈনিক সংবাদ/জনকণ্ঠ, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ২
ঘটনা সংগঠনের তারিখ অজ্ঞাত
সদরপুর, ফরিদপুর দখল ও চুরিতে আক্রান্ত বাইশরশি হিন্দু জমিদার বাড়ি
৩০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বাইশরশি জমিদার বাড়ি। এসব জমি এখন ভূমি দস্যুদের দখলে। বাড়ির জানালা দরজাও চুরি হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর বাড়িটি অধিগ্রহণ করলে এ নিদর্শনটি লোপাট হতো না।
-দৈনিক ইত্তেফাক, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৩
৬ ফেব্রুয়ারি,২০ ১৫
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর মন্দির ও বিদ্যালয়ে আগুন
গত শুক্রবার ভোর রাতে নাপিতখালিতে একটি মন্দিরে আগুন দিয়ে র্দুবৃত্তরা পালিয়ে যায়। একই দিনে কাউখালীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
-দৈনিক কালের কণ্ঠ/পিরোজপুর কণ্ঠ/ভোরের কাগজ, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৪
২১ জানুয়ারি , ২০১৫
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর হিন্দু সম্পত্তি দখল
আন্ধার মানিকের বাসিন্দা বিজয় কৃষ্ণ বড়াল জমির মামলায় হাজতে থাকার সুযোগ নিয়ে সন্ধ্যায় সন্ত্রাসী মজিবর রহমান তার বাহিনী নিয়ে বিজয় বড়ালের জায়গা দখল করে এবং ওই পরিবারের যারা বাধা দিতে এসেছিলো তাদের হত্যার হুমকি দেয়।
-দৈনিক পিরোজপুর কণ্ঠ/ পিরোজপুরের কথা, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৫
৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
গাইবান্ধা মন্দির ভাংচুর ও বসতবাড়িতে হামলা
সদর উপজেলার আনালেরতাড়ি গ্রামে শনিবার সকালে বিধবা সাবিত্রী রানীর নবনির্মিত বসতবাড়ি ও মন্দির ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আবদুর রশীদ ও তার বাহিনী। সন্ত্রাসী রশিদ ও তার স্ত্রী বহুদিন ধরে তার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। তা না দেয়ায় এ নারকীয়তা।
-দৈনিক জনকণ্ঠ, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৬
ঘটনার তারিখ অজ্ঞাত
মিরপুর, কুষ্টিয়া জমি বেদখল
-অগ্নিযুগের বীর ক্ষুদিরামের মামা রায় সাহেব পূর্নচন্দ্রের বাড়ি ছিলো আমলাপাড়ার অঞ্জনগাছীতে। সেখানে তাঁর ৯ বিঘা জায়গার উপরে বাড়ি ছিলো। ইতিমধ্যে তা প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে।
-দৈনিক ইত্তেফাক, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৭
৬ ফেব্রুয়ারি,২০১৫
কাউখালী, পিরোজপুর বসতবাড়ি দখলের চেষ্টা
-কাউখালীতে শ্রীগুরু সংঘের নাম ব্যবহার করে এলাকার চিহ্নিতভুমি দস্যুরা বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের জমি দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে জায়গার দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য।
-দৈনিক সমকাল/পিরোজপুর কণ্ঠ, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৮
১২ জানুয়ারি, ১৫
নাজিরপুর, পিরোজপুর বাগন বাড়ি দখল ১ নাজিরপুর বিএনপির তিন নেতা কালাম সর্দার, হাসকিনও নজরুল তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীসহ শ্যামল বৈরাগী ও বিধান বৈরাগীর বাগানবাড়ি দখল করে নিয়েছে। স›ত্রাসীরা তাদের ২লাখ টাকার গাছ কেটে নিয়ে গেছে।
-দৈনিক আলোকিত বংলাদেশ, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ৯
৮ ফেব্রুয়ারি, ১৫
পার্বতীপুর, দিনাজপুর আদিবাসী তরুণী ধর্ষণ ১ দিনাজপুরের পার্বতীপুরে আদিবাসী সাওঁতাল তরুণীকে অপহরণ করে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে দুই বখাটে যুবক।
-দৈনিক সমকাল, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

ঘটনা ১০
১০ ফেব্রুয়ারি, ১৫
মুন্সীগঞ্জ সংখ্যালঘু পরিবারকে হুমকি দিয়ে উড়ো চিঠি
-‘বসতভিটে ছেড়ে যাবি, নয়তো তোর পরিবারকে পেট্রোল বোমা মেরে উড়িয়ে দেবো।’ এমন হুমকি দিয়ে শহরের পূর্ব দেওভোগ এলাকার সজল গোস্বামী বরাবরে বেনামে চিঠি দেয়া হয়েছে।
-দৈনিক সমকাল, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১১
ঘটনা ঘটার তারিখ ১০-১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ পর্যন্ত
গ্রাম-কানকুনিপাড়া, ইউনিয়ন-বড়বাইশদিয়া, উপজেলা-রাঙ্গাবালী, পটুয়াখালী ২৮টি হিন্দু পরিবার অবরুদ্ধ, লুটপাট ধর্ষণ এবং শ্লীলতাহানি
দাসের কান্দার ২৮টি হিন্দু পরিবারকে গত ৫ দিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের বাড়িতে লুটপাট, ধর্ষণ এবং দৈহিক নির্যাতন চালিয়েছে বিএনপির ৩ নেতা রুহুল আমিন সিকদার, লিন সিকদার বাবু গাজী ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী। হিন্দুদের তাড়িয়ে তাদের জায়গা দখল করার জন্য এ ধরনের নির্যাতন চালানো হচ্ছে। আহত ১০ জন।
-দৈনিক জনকণ্ঠ/সংবাদ, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১২
ঘটনা ঘটার তারিখ অজ্ঞাত
বেনাপোল, যশোর, শ্মশানের জমি দখল
নাভারন দেউলি এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩ শ’ বছরের পুরানো মহাশ্মশানের জমি দখল করেছে নুর ইসলাম নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী।
-দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৩
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ৫ মূর্তি ভাংচুর
-গত শুক্রবার নগরপাড়া পুজা মন্ডপে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ৫টি মূর্তি ভাংচুর করে ।
-দৈনিক ইত্তেফাক/ আমাদের সময়, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৪
ঘটনা ঘটার তারিখ অজ্ঞাত
গোপালগঞ্জ হিন্দু পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়
মন্ডলদের পুকুর থেকে জোর করে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে জামাত নেতা আবুল কালাম তার বংশীয় লোকজন নিয়ে মন্ডলবাড়িতে হামলা চালায় ও বেধড়ক মারপিট করে। এখনও নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে পরিবারটি। আহত ৫।
-দৈনিক জনকণ্ঠ, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৫
২০ ফেব্রুয়ারি. ১৫
পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ ৩ হিন্দুকে কুপিয়ে জখম
জমি বিরোধের জের হিসেবে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের স্বপন সরকার, বিপ্লব ও মিলন রানী কে কুপিয়ে জখম করেএকই গ্রামের আলফাজ শরীফ ও তাদের লোকজন। আহত ৩।
-দৈনিক সংবাদ, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৬
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
শেরপুর, বগুড়া মন্দিরে আগুন
গত সোমবার চন্ডিজান রাধাগোবিন্দ মন্দিরে রাত ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা খড় ও কাপড়ে কেরোসিন ঢেলে মন্দিরে আগুন দিয়ে পালানোর সময়ে দুই শিবির কর্মী ফরহাদ(১৯) ও তোহা (২২) কে জনগণ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
-দৈনিক সংবাদ, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

ঘটনা ১৭
২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৫
যশোর ১১৬ হিন্দু পরিবার জিম্মি
চুড়ামন কাঠি ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা ও তার বাহিনীর অত্যাচার, নিপীড়ন এবং চাঁদাবাজির কাছে জিম্মি জীবন যাপন করছে ১১৬টি হিন্দু পরিবার। তারা যাকে খুশী তাকে ধরে আটকে রেখে নির্যাতন চালায়, ঘেরের মাছ লুটে নেয়, চাঁদাবাজি করে এভাবে জিম্মি হয়ে আছে ৪০০জন মানুষ।

যেদিন বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করবেন এবং আগের ঘটে যাওয়া সবগুলো ঘটনার সঠিক বিচার করবেন, সেদিন বুঝব আপনি আমার লেখা পড়ে জবাব দিয়েছেন।

নীলাদ্রি বিশ্বাস এর ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত