‘আমার স্ত্রী আর শাওয়ার নেন না’

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:১৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

‘আমার স্ত্রী এখন আর শাওয়ার নেন না। তিনি দেড় লিটারের মতো পানি ফুটিয়ে তার সাথে এক লিটারের মতো টেপ ওয়াটার মিশিয়ে তার ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যবহার করেন। আবার একবার ব্যবহৃত পানি আমরা সংরক্ষণ করি টয়লেটে ব্যবহারের জন্য-এভাবেই পানির সংকটের কথা তুলে ধরেন কেপটাউনে বসবাসরত বিবিসির কর্মকর্তা মোহাম্মেদ আলী।’

তিনি আরো বলেন, ‘কেপটাউনের অন্য অধিবাসীদের মতোই তার পরিবারের চার সদস্যও সংরক্ষণ করা পানি ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। সন্তানরা গোসল করে মাত্র দু মিনিটের মধ্যে।’

আফ্রিকান পেঙ্গুইন, সাগর আর পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহর। খুব শীঘ্রই শহরটি সারা বিশ্বে পরিচিত হতে যাচ্ছে অন্য আরেকটি কারণে। আর সেটি হলো বিশ্বের প্রথম পানিহীন শহর।

সাম্প্রতিক উপাত্তগুলো আভাস দিচ্ছে,মার্চের শুরুতেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে কেপটাউনের অধিবাসীরা কিংবা ভ্রমণরত পর্যটকরা। এ সংকট বা সমস্যার কারণ, গত তিন বছরে ইতিহাসের সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে সেখানে। অন্যদিকে দিনে দিনে শহরটিতে জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। শহরের প্রায় চল্লিশ লাখ অধিবাসীকে সংরক্ষণ করা পানি ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। তাও আবার দিনে কোনভাবে ৮৭ লিটারের বেশি নয়। 

খাবার, গোসল, টয়লেট কিংবা আনুষঙ্গিক সব দরকারের জন্যই এটুকু বরাদ্দ। তীব্র খরার সময় পানি ব্যবহারের সীমা ৫০ লিটারে নামিয়ে আনেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ৫০ লিটার পানির ব্যবহার সত্যিই কঠিন সেখানকার মানুষের জন্য। কারণ সাধারণত একবার গোসলের সময় প্রতি মিনিটে দরকার হয় ১৫ লিটার পানি। গাড়ি ধোয়া বা সুইমিং পুলে পানি রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পানির এমন সংকটের সাথে মানুষ যেমন অভ্যস্ত হচ্ছে তেমনি এ নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ অভিযোগও।

এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আলী বলেন, কর্তৃপক্ষের সব প্রচেষ্টা আসলে ডে-জিরোকে বিলম্বিত করা। ডে-জিরোর নির্ধারণ হয়ে আছে ১২ই এপ্রিল। যেদিন কেপটাউনের পানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

কেপটাউনের পানি বিষয়ক তথ্য:

পানি ব্যবহারের সীমা: প্রতি অধিবাসী দিনে ৮৭ লিটার, পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে ৫০ লিটার।

ডে জিরো: ১২ এপ্রিল

গৃহস্থালি ব্যবহার: ৭০% পানিই গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার হয়

প্রয়োজন ছাড়া টয়লেট ফ্ল্যাশ নয়, প্রতি ফ্ল্যাশে লাগে ১৫ লিটার পানি।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত