চিত্রকর্মে সাজুক ঘর

প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:৪৭

জাগরণীয়া ডেস্ক

বর্তমান আধুনিক জীবনে অন্দরমহলের সজ্জার জন্য নানা ধরণের পেইন্টিং সকলের কাছে বেশ পছন্দনীয়। ঘরের সাজে একটু বৈচিত্র্য আনতেও পেইন্টিং অতুলনীয়। ঘরে ঢুকে পছন্দের কোনো পেইন্টিংয়ে চোখ পড়লে নিমিষে সারাদিনের সব ক্লান্তি চলে যায়। ঘরে থাকা পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে আমাদের রুচিবোধেরও পরিচয় পাওয়া যায়।

চিত্রশিল্পীদের মতে, একজন মানুষের রুচি কেমন বা তিনি কোন পেশার, তা সেই ব্যক্তির ঘরের পেইন্টিং দেখে বোঝা যায়। ঘর সাজাতে অনেক আগে থেকেই চলে আসছে পেইন্টিংয়ের ব্যবহার। বর্তমানে পেইন্টিংয়ে নানা রকম উপাদান ব্যবহার করছেন শিল্পীরা। নিত্যনতুন ফিউশনের মাধ্যমে শিল্পীরা নিজেদের যেমন ঢেলে সাজাচ্ছেন তেমনি কৌতূহলী মানুষের মাঝে তীব্র আকর্ষণ সৃষ্টি করে চলেছেন। নিজের বাড়ি ঘরকে মনের মতো সাজসজ্জায় পূর্ণ করতে সবারই রয়েছে আগ্রহ। সৌন্দর্যপিপাসুরা সবসময়ই চান সুন্দর এবং আকর্ষণীয় রুচিসম্মত করে নিজের ঘরকে সাজসজ্জায় পরিপূর্ণ করতে। সাজসজ্জায় নিজের ঘরকে সাজাতে দেয়ালে পেইন্টিংয়ের কোনো তুলনা নেই।

যেকোনো ঘরে পেইন্টিং ব্যবহারের আগে কোন ঘরে লাগানো হচ্ছে, বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। কেবল পেইন্টিং ঘরে ঝোলালেই হবে না, ঘরের দেয়ালটা কেমন কিংবা আসবাবের ধরন অথবা কোন ঘরে পেইন্টিং রাখা হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে পেইন্টিংয়ের বিষয়। শোবার ঘরের জন্য হালকা রঙের পেইন্টিং সবচেয়ে ভালো। কেননা, দিন শেষে ক্লান্তি দূর করতে শোবার ঘরে সবাই চান কিছুটা স্নিগ্ধ আবেশ। এক্ষেত্রে প্রকৃতির স্নিগ্ধ কোনো পেইন্টিং, ব্যক্তির প্রতিকৃতি কিংবা রাখা যেতে পারে বিমূর্ত কোনো পেইন্টিং। শিশুদের ঘরে অবশ্য উজ্জ্বল রঙের সঙ্গে কার্টুন অথবা বাচ্চার ছবিসম্বলিত কোনো পেইন্টিং হলে ভালো হয়। করিডরের দুই দেয়ালজুড়ে বিভিন্ন আকারের বেশ কিছু পেইন্টিং ঝোলালে বেশ ভালো লাগে। বারান্দার পেইন্টিং আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত করলে ভালো হয়। তবে গাছ অথবা ফুলের পেইন্টিং পরিবেশকে শান্ত রাখে। তবে তা যেন আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ঘরকে উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করে তুলতে আসলে পেইন্টিংয়ের তুলনা নেই। খুব নামীদামি শিল্পীর আঁকা পেইন্টিং ঝুলাতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বেশ রঙিন একটি সাধারণ পেইন্টিংও পুরো ঘরের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকাংশে। চাইলে বড় ক্যানভাস কিনে নিজেও আঁকিবুঁকি করে নিতে পারেন। নিজের হাতে রং করা একটি ক্যানভাস দেখে প্রতিবারই মনটা খুশিতে ভরে উঠবে। পেইন্টিংয়ের ক্ষেত্রে হলুদ, টিয়া, সবুজ, লাল ইত্যাদি রংগুলোকে প্রাধান্য দিন। বাংলাদেশের খ্যাতিমান ও প্রতিষ্ঠিত প্রধান শিল্পীদের পেইন্টিং ঝুলাতে পারেন। জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসান, এসএম সুলতান, সাইফুদ্দীন আহম্মেদ, আনোয়ারুল হক, মোহাম্মদ কিবরিয়াসহ আরও বিখ্যাত চিত্রশিল্পীর আঁকা পেইন্টিং আপনার দেয়ালকে সুন্দর করে তুলতে পারে। এ ছাড়া আরও আছেন চিত্রশিল্পী আমিনুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, কাইয়ুম চৌধুরী, রফিকুন নবী, আবু তাহের, নিতুন কুণ্ডু, সাহাবুদ্দিন প্রমুখের পেইন্টিং। বর্তমানে কিছু নবীন শিল্পীরা শিল্পকর্ম ও নাম করেছে।

দেয়ালে টাঙাতে পেইন্টিং কিনতে হলে সঠিক দাম জেনে পেইন্টিং কেনাটা অনেক জরুরি। পেইন্টিংয়ের মধ্যে তেল রঙের দাম সবচেয়ে বেশি। একটি তৈলচিত্রের দাম তিন হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই তৈলচিত্র অনেকদিন পর্যন্ত টেকসই হয়, কমপক্ষে পঞ্চাশ থেকে ষাট বছর পর্যন্ত। জল রঙের পেইন্টিংস পাওয়া যায় এক হাজার থেকে দশ হাজার টাকার মধ্যে। তবে প্রধান শিল্পীদের জল রঙের দাম আরও বেশি। স্কেচের দাম পড়বে সাধারণত ফ্রেমসহ এক হাজার টাকা থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত। আর গ্রাফিক্সের দাম এক হাজার টাকা থেকে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে নবীন শিল্পীর শিল্পকর্ম তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়। প্রিয়জনকে প্রেজেন্টেশন হিসেবে দেওয়ার জন্য পেইন্টিং পাওয়া যায় আট শত টাকা থেকে বারো শত টাকার মধ্যে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত