ঝটপট তৈরি করুন সুস্বাদু ব্যাম্বো চিকেন

প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০১৭, ২০:৫৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর খাবারের মধ্যে ‘চুমোত হুরো গোরং (chicken ghorang in Bamboo-Indigenous flavor)’ বা ‘ব্যাম্বো চিকেন’ খুবি পরিচিত এবং জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু খাবার। চাইলে বাড়িতে বসে ঝটপট তৈরি করতে পারেন আপনিও। বাড়িতে তৈরি করতে না পারলে এর স্বাদ নিতে আপনাকে অবশ্যই আসতে হবে পাহাড়ে।

পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলে চোখে পড়ে এই সুস্বাদু লহাবার। ১৫/২০ বছর আগে পাহাড়িরা বাঁশের চোঙা দিয়ে বেশী রান্না করতো। এখনও সেই প্রচলন রয়ে গেছে। তবে সেটা মাঝেমধ্যে। বাশেঁর চোঙার মধ্যে কিভাবে রান্না হয়? এর স্বাদ কেমন? যারা দেখেননি তাদের হয়ত খুব আগ্রহ হচ্ছে। তবে পাহাড়িদের পক্ষে এর উত্তর দেয়া খুব সহজ।

এই রান্নাটির জন্য প্রয়োজন বাঁশ। অপরিপক্ক তাজা এবং কাঁচা বাঁশ হলে ভাল হয়। এ বাঁশে পানির পরিমাণ বেশী থাকায় সহজে পুড়ে যায় না, ফলে দীর্ঘ সময় আগুনে রাখা যায়। সব বাঁশ দিয়ে রান্না করা গেলেও মূলত ফারোয়া বাঁশ, ডুলু বাঁশ, মিটিঙ্গ্যা বাঁশ বেশী ব্যবহার হয়। এগুলো আকারে অন্য বাঁশের চেয়ে বড়। একটি বাঁশ হতে ২০-৩০ টির অধিক চোঙা পাওয়া যায়। চোঙাটির একদিকে মুখ রেখে একদিকে বাঁশের গিরা রাখা হয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ
মুরগী-৭০০ গ্রাম, রসুন-১০০ গ্রাম, পেয়াজ-১০০ গ্রাম, আদা বাটা-১০ গ্রাম কাচা মরিচ বাটা-৫০ গ্রাম, ধনিয়া পাতার কুচি-২০ গ্রাম, হলুদ ও লবণ পরিমান মত, কাচাঁ বাশের ১টি চোঙা, কলা পাতা-১টি, পরিস্কার পানি - দেড় কাপ।

প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে মুরগী মাংস ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে। তারপর সমস্ত উপকরণ একমাথে মিশিয়ে আধ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। অন্য দিকে বাশের চোঙাটি গরম পানিতে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর উপকরণ মিশ্রিত মাংসগুলো চোঙাতে ঢুকিয়ে দিতে হবে। এরপর আধা কাপ জল চোঙাতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর কলাপাতা দিয়ে চোঙাটির মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। সবশেষে চোঙাটি কয়লা চুলায় লম্বালম্বিভাবে বসিয়ে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে চোঙাটি যাতে বেশি পুরে না যায়। সেজন্য কিছুক্ষণ পর পর চোঙাটি নাড়িয়ে দিতে হবে। 

এবার নির্দিষ্ট সময়ের পর চোঙাটি যখন বয়েলিং পয়েন্টে আসবে তখন চোঙাটি থেকে বাস্প বেরিয়ে এলে আরো ১০-১৫ মিনিট পর চোঙাটি নামিয়ে ফেলুন। তারপর চোঙাটি মাঝ খান বারাবর কেটে ডিস সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

পাহাড়ে বেড়াতে আসা পযর্টকদের প্রধান আকর্ষণ এই খাবার। খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দারবানের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে সুস্বাদু এই খাবার পাওয়া যায়। এরমধ্যে রাঙামাটির বনরুপা শহরের রাজবাড়ি সাবারাং রেস্টুরেন্ট, বনরুপা শহরের রুচ্ছেদোলা, খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়া পাড়ার সিস্টেম রেস্টুরেন্ট এবং টং রেস্টুরেন্টে এই খাবার পাওয়া যায়। খাবার আগে থেকেই অর্ডার দিলে ভাল হয়। চাইলে স্থানীয় বাজার থেকে বাশেঁর চোঙা ঘরে নিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়। প্রতিটি চোঙা ৫-১০ টাকা করে বিক্রি হয় বাজারে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত