গোয়ালন্দ গণহত্যা দিবস আজ

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০১৭, ১২:৪৯

জাগরণীয়া ডেস্ক

২১ এপ্রিল গোয়ালন্দ গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী তৎকালীন গোয়ালন্দ মহকুমা আক্রমন করে। মানিকগঞ্জের আরিচাঘাট থেকে মেশিনগান, মর্টারসহ ভারি যুদ্ধাস্ত্র বোঝাই স্টিমার ও গানবোট নিয়ে নদীপার হয়ে তারা প্রথম এসে নামে গোয়ালন্দের উজানচর ইউনিয়নের কামারডাঙ্গি নামক এলাকায়। এসময় সেখানে স্থানীয় জনতার সহায়তায় ইপিআর, আনছার ও মুক্তিবাহিনীর একটি দল হালকা অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তারা প্রতিরোধ সৃষ্টি করেন। কিন্তু পাকবাহিনীর ভারি অস্ত্রের মুখে কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রতিরোধ ভেঙে যায়। এসময় হানাদারের বুলেটে প্রথম শহীদ হন আনছার কমান্ডার মহিউদ্দিন ফকির।

এরপর পাকবাহিনী দ্রুত এগিয়ে এসে স্থানীয় বালিয়াডাঙ্গা গ্রাম ঘিরে ফেলে। সেখানে বৃষ্টির মতো গুলি চালিয়ে তারা গণহত্যাযজ্ঞ চালায়। এসময় হানাদারের বুলেটে শহীদ হন বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের স্বাধীনতাকামী ২৪ জন মানুষ। তারা হলেন, জিন্দার আলী মৃধা, নায়েব আলী বেপারি, মতিয়ার বেগম, জয়নদ্দিন ফকির, কদর আলী মোল্লা, হামেদ আলী শেখ, কানাই শেখ, ফুলবুরু বেগম, মোলায়েম সরদার, বুরুজান বিবি, কবি তোফাজ্জল হোসেন, আমজাদ হোসেন, মাধব বৈরাগী, আহাম্মদ আলী মন্ডল, খোদেজা বেগম, করিম মোল্লা, আমোদ আলী শেখ, কুরান শেখ, মোকসেদ আলী শেখ, নিশিকান্ত রায়, মাছেম শেখ, ধলাবুরু বেগম, আলেয়া খাতুন ও বাহেজ পাগলা।

বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে গণহত্যা শেষে ওই দিন দুপুরে পাশের কুমড়াকান্দি গ্রামে হানা দেয় পাকবাহিনী। সেখানে তারা হত্যা করে ওই গ্রামের বাসিন্দা হাকিম আলী, মালেক খা, ছকেল উদ্দিন, দারোগ আলী বক্স ও গিয়াস মন্ডল ওরফে গাইসাসহ নাম না জানা আরো অনেককে। কুমড়াকান্দি গ্রামে গণহত্যা চালানোর পরপর একই দিনে দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত গোয়ালন্দ স্টিমারঘাট, ফেরিঘাটসহ গোয়ালন্দ বাজার আক্রমন করে পাকবাহিনী। এসময় তারা স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় বাজারের কয়েকশ দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠনে ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই থেকে ২১ এপ্রিল গোয়ালন্দ গণহত্যা দিবস।

গোয়ালন্দ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মো. শাহজাহান শেখ বলেন, ‘২১ এপ্রিল গোয়ালন্দ গণহত্যা দিবস। দিবসটির সরকারি স্বীকৃতির দাবীতে আজ শুক্রবার গোয়ালন্দে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত