প্রেগনেন্সির কতদিনের মধ্যে গর্ভপাত নিরাপদ?

প্রকাশ : ২২ জুন ২০১৬, ১৭:৫৯

জাগরণীয়া ডেস্ক

গর্ভাশয়ের ভ্রুনটি ডিম্বানু নিষেকের পর থেকে পরবর্তী ২০ সপ্তাহের মধ্যে যে কোন সময়ে প্রসবের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যাবার নামই গর্ভপাত বা Abortion। বর্তমান বিশ্বে অধিকাংশ গর্ভপাতই হয় ইচ্ছাকৃত ভাবে ভ্রুন নষ্ট করার কারণে। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে, অনেক সময় মায়ের সন্তানটি ধারণ করার ইচ্ছা থাকলেও নিজে থেকেই গর্ভপাত (Miscarriage) হয়ে যেতে পারে আবার মায়ের স্বাস্থ্য রক্ষা বা শিশুটিকে চরম দুর্ভাগ্যের (চরম প্রতিবন্ধি) হাত থেকে বাঁচাতেও বৈধভাবে গর্ভপাত (Therapeutic abortion) করানো যেতে পারে।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আইনত ২০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করানো গেলেও ১২ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত নিরাপদ । ৯ সপ্তাহ পর্যন্ত ঔষুধের দ্বারাই গর্ভপাত করানো সম্ভব বলে মনে করছেন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ১২ সপ্তাহের পর গর্ভপাত করানোর সিদ্ধান্ত নিলে অবশ্যই ২ জন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরী । ২০ সপ্তাহের পর গর্ভপাত করানো বেআইনি কারণ এই সময় শিশুর সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গের গঠন শেষ হয়ে যায়, তাই এসময়ে ইচ্ছাকৃত গর্ভপাত ঘটানোকে সাধারণত শিশু হত্যার সঙ্গে তুলনা করা হয় । এমনকি মায়ের স্বাস্হ্যের পক্ষেও এটা নিরাপদ নয় ।

কি কি সমস্যা হতে পারে?
১. শরীরে ইনফেরশন
২. জরায়ু বাদ দিতে হতে পারে
৩. মৄত্যুও ঘটতে পারে।

MTP(Medical Termination Of Pregnancy) laws & rules of 1971-এ বলা হয়েছে, গর্ভপাত করানোর সময় ৩টি বিষয়ে নজর রাখতে হবে।

১. কে করছেন? অর্থাৎ একজন অভিজ্ঞ স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞই পারেন গর্ভপাত করাতে।
২. কোথায় করছেন? অর্থাৎ গর্ভপাত করানোর জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো আছে সেইরকম কোনো হাসপাতালে গর্ভপাত করানো যাবে।
৩. কত সপ্তাহের মধ্যে করছেন? অর্থাৎ ২০ সপ্তাহের পর গর্ভপাত করালে সেটা বেআইনি বলে গণ্য হবে।

থেরাপিউটিক এবরশন করাতে হলে স্ত্রীর সাথে সাথে স্বামীরও লিখিত সম্মতি নেবার প্রয়োজন হয়। এটা অবশ্যই হাসপাতালে করানো উচিত। মায়ের কোনো রোগ এর কারণে যদি এটা করাতে হয় তাহলে অবশ্যই সেই বিষয়ে কমপক্ষে দুই জন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ লিখিত অনুমতির প্রয়োজন আছে। যদি এমন অবস্থা দেখা দেয় যে তৎক্ষনাত গর্ভপাত না করালে মায়ের মৃত্যুর সম্ভাবনা আছে তাহলে অবশ্যই সার্জেন বা অন্য কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গর্ভপাত করানো উচিত নয়।

ভ্রুনের প্রথম দিন থেকেই তাকে একটি মূল্যবান প্রাণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে, এটাই চিকিৎসাশাস্ত্রের মূলমন্ত্র। তাই থেরাপিউটিক এবরশনের বাচ্চাটি যদি সুস্থ্য থাকে এবং তাকে বাঁচিয়ে রাখা যায় তাহলে অবশ্যই সেই চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত