স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০১৭, ২১:৫৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নারী কর্মকর্তাদের নিয়ে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৩০ এপ্রিল (রবিবার) বিকাল ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম এবং রোশ বাংলাদেশ যৌথআয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) নীলিমা আখতার বিশেষ অতিথি এবং জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এর মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডাঃ পারভীন শাহীদা আকতার সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এবং এটুআই প্রোগ্রামের প্রায় ১০০ জন নারী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং ৯১ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান। এর মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন প্রায় ১৫ হাজার নারী এবং মারা যান প্রায় ৭ হাজার জন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের অবস্থান দ্বিতীয়। দিন দিন এই ক্যান্সারের ভয়াবহতা এবং ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে। সঠিক সময়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে এবং সঠিক চিকিৎসা পেলে অসংখ্য অনাকাংখিত মৃত্যু বহুলাংশেই এড়ানো সম্ভব এবং দেশকে অপূরনীয় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এ সচেতনতার অভাব বাংলাদেশের অধিকাংশ নারীদের মধ্যে বিদ্যমান। কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতন করা এবং সঠিক সময়ে ক্যান্সার নির্ণয় করা অত্যন্ত জরুরি। রোশ বাংলাদেশ এর উদ্যোগে সারা দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্বপালনরত নারী চাকুরিজীবীদের স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতন করার চলমান কার্যক্রমের ধারাবাহিক অংশ হিসেবে এই আয়োজনটি এটুআই প্রোগ্রামের সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নারী কর্মকর্তাদের জন্য অনুষ্ঠিত হয়।

মূল বক্তা প্রফেসর ডাঃ পারভীন শাহীদা আক্তার স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতন হবার উপায়সমূহ এবং স্তন ক্যান্সারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসাব্যবস্থার অপ্রতুলতা এবং উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থার অনুপস্থিতির ওপর আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়।

উপস্থিত বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন নারী শুধুমাত্র তার সচেতনতা দিয়ে এই নীরব ব্যাধিকে জয় করতে পারেন এবং প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ নারী সদস্যগণ এ বিষয়ে সচেতন হলে পুরো দেশে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে যা প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের সচেতন করতে সহযোগিতা করবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ এর আওতায় লক্ষ্য-৩ এর অধীনে অসংক্রামক ব্যাধিকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ রোল মডেল হয়ে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে এবং এই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের পূর্বেই অর্জন করার জন্য বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করেছে। আর এই লক্ষমাত্রা অর্জন করতে হলে প্রয়োজন সকলের অংশগ্রহণ এবং অংশীদারিত্ব।

ক্যান্সার চিকিৎসা, গবেষণা ও ডায়াগনস্টিকস প্রতিষ্ঠান রোশ বিগত ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গবেষণার মাধ্যমে ক্যান্সারের যুগান্তকারী সমাধান নিয়ে এসেছে এবং বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ২ কোটি ৫০ লক্ষাধিক ক্যান্সার রোগী এ প্রতিষ্ঠানের সেবা পেয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন কর্তৃক তালিকাকৃত এসেনশিয়াল ড্রাগের মধ্যে রোশ থেকে উদ্ভাবিত ২৯টি ঔষধ স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশে রোশ গত ২০ বছর ধরে সেবা দিয়ে আসছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত